১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নিরাপত্তাচুক্তি নিয়ে সুলিভান ও সৌদি যুবরাজ বৈঠক

ওয়াশিংটন-রিয়াদ পরমাণু সহায়তা চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে
-


ওয়াশিংটন ও রিয়াদের মধ্যে একটি চুক্তির প্রায় চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক করেছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। গতকাল রোববার সকালে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রিয়াদ জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের সাথে বিস্তৃত নিরাপত্তাচুক্তি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
সৌদি শহর দাহরানে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক সম্পর্কে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত চুক্তির সেমিফাইনাল সংস্করণ পর্যালোচনা করা হয়েছে, যা প্রায় চূড়ান্ত করা হচ্ছে। মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং বেসামরিক পারমাণবিক সহায়তার ব্যাপারে ওয়াশিংটন ও রিয়াদ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার খুব কাছে পৌঁছেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের প্রেক্ষাপটে সৌদি-ইসরাইল সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির বাস্তবায়নকে ধরা হয় ব্যাপক আকারের দর কষাকষির ক্ষেত্র হিসেবে। সেটি এখনো রয়ে গেছে নাগালের বাইরে।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তার বৈঠকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের জন্য দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য উপায় খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তা, গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ এবং সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ সুগম করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউজ জানিয়েছিল যে, জ্যাক সুলিভান গাজাসহ দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরব ও ইসরাইল সফর করবেন এবং অঞ্চলটিতে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের প্রচেষ্টা চালাবেন।
সাধারণত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যেই পারমাণবিক চুক্তি করা হয়ে থাকে। সে হিসেবে বিশ্বের বৃহত্তম তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরবের পারমাণবিক চুক্তি করার ব্যাপারে তীব্র আকাক্সক্ষা থাকার কথা নয়। তবে একটি উচ্চাভিলাষী দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যথেষ্ট পরিমাণ নবায়নযোগ্য শক্তি তৈরি এবং কার্বন নির্গমন কমাতে চাইছে সৌদি আরব। সমালোচকরা বলছেন, কখনো পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের প্রয়োজন দেখা দিলে যাতে সহজে সেই লক্ষ্য অর্জন করা যায়, তা নিশ্চিত করতে সৌদি আরব এই উদ্যোগ নিয়েছে।

অন্য দিকে ওয়াশিংটনের দাবি, চুক্তিতে বিষয়টি প্রতিহত করার জন্য শর্ত থাকছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সৌদি আরবের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাচুক্তি নির্ভর করবে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ওপর। এ সময় সৌদি যুবরাজ মার্কিন ওই শীর্ষ কর্মকর্তাকে গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকর, ত্রাণবহর না আটকাতে এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার ব্যাপারে ইসরাইলকে রাজি করাতে বলেন।
সৌদি আরবের কাছ থেকে ইসরাইলের স্বীকৃতি আদায়ের মার্কিন উদ্যোগের বড় একটা অংশজুড়ে রয়েছে এই দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তাচুক্তি। কিন্তু গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে সৌদি-ইসরাইল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে মার্কিন উদ্যোগ থেমে ছিল। অতীতে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এই চুক্তিতে ইসরাইলের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উপাদান রয়েছে; কিন্তু সে জন্য ইসরাইলকে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে একমত হতে হবে।
সৌদি আরব সফর শেষে ইসরাইল পৌঁছেছেন সুলিভান। সেখানে তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাথে বৈঠক করবেন। বৈঠকে তিনি সৌদি আরবের সাথে আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্কে নেতানিয়াহুকে অবহিত করবেন। এ ছাড়া গাজার রাফায় ইসরাইলের পরিকল্পিত সামরিক বিষয় নিয়েও তিনি আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।

 


আরো সংবাদ



premium cement