ইসরাইলের আরো অভ্যন্তরে হামলা হিজবুল্লাহর
- আলজাজিরা
- ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা প্রায় সাত মাস ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। এর জেরে লেবানন সীমান্তেও হামলার মুখে পড়েছে দেশটি। লেবাননের ইরানসমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরাইলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় হিজবুল্লাহ ইসরাইলি ভূখণ্ডের আরো অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে।
হিজবুল্লাহর এ হামলাকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইলের গভীরতম অভ্যন্তরে আক্রমণ বলে মনে করা হচ্ছে। লেবাননের সংগঠন হিজবুল্লাহ বলেছে, একজন যোদ্ধাকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে তারা একর শহরের উত্তরে ইসরাইলি ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হিজবুল্লাহর এ হামলাকে ইসরাইলি ভূখণ্ডের সবচেয়ে গভীরে আক্রমণ চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, হিজবুল্লাহ একর ও নাহারিয়ার মধ্যবর্তী দু’টি ইসরাইলি ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে ‘ডিকয় ও বিস্ফোরক ড্রোন ব্যবহার করে সম্মিলিত হামলা চালিয়েছে’। ইরানসমর্থিত এ গোষ্ঠীটি বলেছে, ইসরাইলি হামলায় তাদের একজন যোদ্ধা নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে তারা এ হামলা চালিয়েছে। হামলার পর তারা একটি স্যাটেলাইট ছবিও প্রকাশ করেছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, হিজবুল্লাহ হামলা চালিয়ে তাদের কোনো স্থাপনাকে আঘাত করেছে কি না সে বিষয়ে তারা অবহিত নয়, তবে এর আগে তারা বলেছিল, তারা ইসরাইলের উত্তর উপকূলে দু’টি ‘উড়ন্ত লক্ষ্যবস্তুকে’ বাধা দিয়েছে। এ দিকে মঙ্গলবার লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের হানিনের একটি আবাসিক এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় কমপক্ষে দু’জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।
এনএনএ বলেছে, ‘ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে একটি দোতলা বাড়িতে আঘাত করে। এ ভবনটিতে একটি পরিবার বসবাস করছিল। ইসরাইলি হামলা শুরু হওয়ার পরও তারা এই শহর ছেড়ে যায়নি।’ হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা দুই বেসামরিক নাগরিকের হত্যার প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার মধ্য রাতে উত্তর ইসরাইলে কয়েক ডজন রকেট নিক্ষেপ করেছে।
এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, বেসামরিক বাড়িঘরে ইসরাইলি আক্রমণের প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিশেষ করে হানিনে ভয়াবহ গণহত্যা এবং বেসামরিকদের হত্যা ও আহত করার প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরাইলে ‘কয়েক ডজন কাতিউশা রকেট’ নিক্ষেপ করেছে। এর আগে মঙ্গলবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, তাদের বিমান হামলায় দক্ষিণ লেবাননে দুই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহ পরে তাদের যোদ্ধা হুসেইন আজকউলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে, কিন্তু বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
পৃথক ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর অভিজাত রাদওয়ান বাহিনীর যোদ্ধা মোহাম্মদ আত্তিয়া নিহত হয়েছেন বলে সামরিক বাহিনী জানিয়েছে। তবে এই দাবির বিষয়ে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মূলত গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরাইলের সঙ্ঘাত শুরুর পর থেকে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলিবিনিময় করছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরাইল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।
বার্তা সংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত লেবাননে কমপক্ষে ৩৭৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ৭০ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। অন্য দিকে হিজবুল্লাহর হামলায় ১০ ইসরাইলি সৈন্য ও ৮ বেসামরিক নাগরিকসহ মোট ১৮ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া নিয়মিত গোলাবর্ষণের কারণে সীমান্তের উভয় পাশে কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা