মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে আফ্রিকায় মারাত্মক তাপমাত্রা বৃদ্ধি
- আলজাজিরা
- ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
মালি ও বুরকিনা ফাসোয় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিজ্ঞানীরা ২০০ বছরের মধ্যে একবার হয়ে থাকে বলে অভিহিত করেছেন।
ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের (ডব্লিউডব্লিউএ) একটি গবেষণা অনুসারে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন এপ্রিল মাসে পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলজুড়ে অস্বাভাবিকভাবে তীব্র ও প্রাণঘাতী গরমের জন্য দায়ী ছিল। বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক তীব্র আবহাওয়ার ঘটনাগুলোর ওপর নিয়মিত নজরদারি করছে।
তাপপ্রবাহের কারণে মালি ও বুর্কিনা ফাসোর তাপমাত্রা ১ এপ্রিল থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এরও বেশি হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সমীক্ষায় বলা হয়েছে এটি এই মৌসুমের অস্বাভাবিক তাপমাত্রা, যা অসংখ্য মৃত্যুর কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। রমজানে চরম আবহাওয়া এবং ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা তাপজনিত হতাহতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, রাতে যেসব লোক অতিরিক্ত তাপ থেকে রেহাই পাবে সেই উপায়ও ছিল না। কারণ রাতে তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকত।
মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন
ডব্লিউডব্লিউএ-এর পর্যবেক্ষণ ও জলবায়ু মডেল অনুসন্ধান অনুযায়ী, ‘আজ অবধি ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে এ অঞ্চলে মার্চ এবং এপ্রিল ২০২৪ তাপপ্রবাহগুলো হয়েছিল; যা এটি ‘মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন’-এর সাথে যুক্ত। যদিও সাহেল বছরের এই সময়ে তাপের সাথে অভ্যস্ত। যদি মানুষ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে পৃথিবীকে উষ্ণ না করত যেমন কয়লা ও বন উজাড়ের মতো অন্যান্য কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকত তাহলে তাপমাত্রা আরো ১.৪ ডিগ্রি কম হতো।
সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে পাঁচ দিনের প্রচণ্ড তাপমাত্রা ২০০ বছরে একবার হয়ে থাকে। তবে সমীক্ষায় সতর্ক করা হয়েছে যে, এই উষ্ণায়নের প্রবণতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। ডব্লিউডব্লিউএ সুপারিশ করেছে যেসব দেশ এমন অতিরিক্ত তাপমাত্রা নিয়ে এমন একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে, যা নাগরিকদের সতর্ক করবে যে কখন অতিরিক্ত তাপমাত্রা আসবে এবং কিভাবে অতিরিক্ত তাপ রোধ করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করবে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার ক্রমবর্ধমান আওতা এবং তীব্রতার সাথে খাপখাইয়ে নিতে বিদ্যুৎ, পানি ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছে।
তাপজনিত প্রাণহানি
ডব্লিউডব্লিউএ জানিয়েছে, দীর্ঘ দিন প্রচণ্ড তাপ ও তীব্রতা মালি ও বুরকিনা ফাসোতে মৃত্যুর সংখ্যা এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। মালির রাজধানী বামাকোর গ্যাব্রিয়েল টুরে হাসপাতালে পুরো মার্চ মাসের ১৩০ জন মৃত্যু হয়েছিল। আর এপ্রিল ১ থেকে ৪ এর মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ডব্লিউডব্লিউএ বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে তথ্যের অভাবে তাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা সঠিকভাবে অনুমান যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, দ্রুত নগরায়ন এবং বুরকিনা ফাসোর রাজধানী বামাকো ও ওয়াগাডুগুর মতো শহরগুলোতে বৃক্ষনিধন শহরগুলোকে অন্যদের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে উষ্ণ করে তুলেছে। সাহেল অঞ্চলের দেশগুলোকে ১৯৭০ এর দশক থেকে খরার সাথে এবং ১৯৯০ এর দশক থেকে তীব্র বৃষ্টিপাতের সাথেও লড়াই করতে হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা