০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`

কাতারের সমর্থন চায় সিরিয়ার নতুন সরকার

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমানের সাথে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ হাসান আশ শায়বানীর বৈঠক : ইন্টারনেট -


কাতারের সমর্থন চায় সিরিয়ার নতুন সরকার। রোববার দোহায় কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক বৈঠকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ হাসান আশ শায়বানী। বাশার আল আসাদের পতনের পর সমর্থন আদায়ের জন্য সিরিয়ার ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতিনিধিদল বিভিন্ন দেশে সফর করছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার কাতার সফর করেন। এ সময় তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম বিন জাবর আলে সানির সাথে সাক্ষাৎ করেন।

বৈঠকে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আসাদ সরকারের আমলে আমেরিকা সিরিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞাগুলো চাপিয়েছিল, তা যেন এবার তুল নেয়া হয়। আর কাতার যেন এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করে। এ ছাড়া কাতারের সাথে সিরিয়া ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করতে চায় বলেও জানিয়েছেন তিনি। পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য কাতারের সাহায্য প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি। কাতার জানিয়েছে, তারা চায় সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটুক। সিরিয়া ফের একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হোক। এ ছাড়াও কাতারের সাথে সিরিয়া ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করতে চায় বলেও জানিয়েছেন তিনি। পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য কাতারের সাহায্য প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সিরিয়ায় ক্ষমতা দখল দখল করেছে বিদ্রোহী দল এইচটিএস। দীর্ঘ দিনের বাশার আল আসাদের সরকারের পতন হয়েছে। আসাদের সাথে রাশিয়া ও ইরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ক্ষমতায় এসেই যেভাবে কাতারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সৃষ্টির কথা বলল সিরিয়ার বর্তমান শাসক তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রোববার বৈঠকের পর কাতারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিরিয়ার নতুন প্রশাসনকে তারা স্বাগত জানাচ্ছে। সিরিয়ার মন্ত্রীরা ইতোমধ্যেই তাদের ওপর থেকে আমেরিকার একাধিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। সিরিয়াও বিষয়টি স্বীকার করেছে।
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, বাশার আল আসাদের আমলে বিশ্ব রাজনীতিতে সিরিয়ার যে কূটনৈতিক অবস্থান ছিল, এবার তা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে আমেরিকার দিকে যাবে। কাতারে গিয়ে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। দেশটি সরাসরি আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এর ফলে তারা যে বিদেশী সাহায্য আরো অনেকটা বাড়াতে পারবে, সে কথাও প্রায় খোলাখুলি বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন ৪০০ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা
এ দিকে রয়টার্স জানায়, গৃহযুদ্ধের ফলে ৯০ শতাংশ সিরিয়ার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন। তাদের কোনো আয় নেই। অনেকের বাড়ি যুদ্ধে ধসে গেছে। সিরিয়ার অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারি কাজের ক্ষেত্রে সবার বেতন ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রোববার সিরিয়ার অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আবাজেদ এই ঘোষণা দেয়। দক্ষতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে মন্ত্রণালয়গুলোর প্রশাসনিক পুনর্গঠন সম্পন্ন করার পর এই বেতন বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়। এই বেতন বৃদ্ধির জন্য সরকারের প্রায় ১২৭ মিলিয়ন ডলার (১.৬৫ সিরিয়ান পাউন্ড) খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় সংস্থান ও আঞ্চলিক সহায়তা, নতুন বিনিয়োগ এবং বিদেশে রক্ষিত সিরিয়ার সম্পদগুলো মুক্ত করার প্রচেষ্টার সংমিশ্রণের মাধ্যমে এই অর্থায়ন করা হবে।

সিরিয়ার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আবাজেদ বলেন, ‘(এটি) দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার জরুরি সমাধানের দিকে প্রথম পদক্ষেপ।’
তিনি জানিয়েছেন, সরকারি কর্মচারীদের গত মাসের বেতন এই সপ্তাহে দেয়া হবে। এই পদক্ষেপগুলো সিরিয়ার নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ১৩ বছরের সঙ্ঘাত এবং নিষেধাজ্ঞার পরে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য একটি বিস্তৃত কৌশলের অংশ।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় কোষাগার যুদ্ধের ফলে তারল্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে উপলব্ধ বেশির ভাগ অর্থই সিরিয়ার মুদ্রা, তবে এর মূল্য অনেক কমে গেছে। নতুন সরকারকে আঞ্চলিক ও আরব দেশ থেকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল বলে মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বর্তমানে পর্যাপ্ত তহবিল রয়েছে আগামী কয়েক মাসের অর্থায়নের জন্য।


আরো সংবাদ



premium cement