০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ৬ রজব ১৪৪৬
`
মার্কিন উপদেষ্টা জেক সুলিভান দিল্লি সফরে চীনা বাঁধ নিয়ে আলোচনা করবেন

ভারতের লাদাখে ২ প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরি বেইজিংয়ের

-

ভারতের লাদাখের কিছু অংশ নিয়ে নতুন দু’টি প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরি করেছে চীন। ভারতীয় বার্তা সংস্থা টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে, দেশটির স্বায়ত্ত্বশাসিত জিনজিয়াং প্রদেশে হি’আন এবং হেকাং নামে এ দু’টি প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরির ঘোষণা দেয় স্থানীয় প্রশাসন। যার কিছু অংশ ভারতের ভূখণ্ডে পড়েছে। এসব অঞ্চল চীনে কাউন্টি হিসেবে পরিচিত।
চীনের এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। গত শুক্রবার সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে জয়সওয়াল বলেন, ‘জিনজিয়াংয়ের হোতানে আমরা দু’টি নতুন কাউন্টি তৈরির ঘোষণা দেখেছি। এসব কথিত কাউন্টির কিছু ভারতের লাদাখে পড়েছে। আমরা কখনো এ অঞ্চলে চীনের অবৈধ দখলদারিত্বকে মেনে নিইনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ অঞ্চলের ভৌগোলিক অখণ্ডতা নিয়ে আমাদের যে অবস্থান, সেটি এসব কাউন্টি তৈরির মাধ্যমে পরিবর্তিত হবে না। একইসাথে চীনের জোরপূর্বক দখলদারিত্বকেও বৈধতা দেবে না। আমরা কূটনৈতিক মাধ্যমে এটি গভীর নিন্দা জানিয়েছি।’ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্টেট কাউন্সিল নতুন দু’টি প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরির অনুমোদন দিয়েছে।
এদিকে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে ভারতের নিরাপত্তা পরামর্শক অজিত দোভাল এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং উই ২৩তম সীমান্ত আলোচনার বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন, যা ২০২০ সাল থেকে থমকে ছিল। ওই সময় ধারণা করা হয়েছিল ভারত-চীনের সীমান্ত উত্তেজনা কমে আসবে। তবে ওই বৈঠকের পর ২৭ ডিসেম্বর ভারতের লাদাখের কিছু অংশ নিয়ে নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় চীন।
ভারত সফরে সুলিভান
এ দিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের আসন্ন ভারত সফরে চীনের নির্মিত বাঁধগুলোর প্রভাব নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা। সুলিভান আজ ৫ ও আগামিকাল ৬ জানুয়ারি এক সফরে নয়াদিল্লি অবস্থান করবেন। ওয়াশিংটন ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা দীর্ঘদিন ধরে এশিয়ায় এবং এর বাইরেও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।
সুলিভানের সফরের আগে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অনেক জায়গায় চীনা বাঁধগুলো, বিশেষ করে মেকং অঞ্চলে, পরিবেশ ও জলবায়ু উভয় ক্ষেত্রেই নিচের দেশগুলোর জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এসব বিষয় ভারতীয় প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করা হবে। ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা তিব্বতের ইয়ালুং জাংবো নদীতে চীনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নদীটি ভারত হয়ে প্রবাহিত হয়।
তবে চীনা কর্মকর্তারা বলেছেন, তিব্বতে তাদের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প পরিবেশ বা নিচের দেশের পানির সরবরাহে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের জন্য গত মাসে অনুমোদন দিয়েছে চীন। এ বাঁধটি বছরে ৩০০ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রাখবে। মার্কিন কর্মকর্তা আরো বলেন, ওয়াশিংটন এ সফরে নয়াদিল্লির উদ্বেগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। চীনের এ প্রকল্প নিয়ে ভারতের উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে ভারতীয় জলসীমার নিচু অঞ্চলে পানির প্রবাহ এবং পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement