ভেনিজুয়েলায় বিরোধী প্রার্থী উরুতিয়া ‘ওয়ান্টেড’

ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে আটক করতে তাঁর সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে পুরস্কার ঘোষণা করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার এক লাখ ডলার পরিমাণ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এত দিন স্পেনে নির্বাসিত থাকা এ নেতা এখন আর্জেন্টিনার পথে আছেন বলে জানা গেছে। গঞ্জালেজ উরুতিয়া জোরালোভাবে বলে আসছেন, গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে পরাজিত করেছেন। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উরুতিয়া বুয়েন্স এইরেসে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে গঞ্জালেজ উরুতিয়া লিখেছেন, ‘লাতিন আমেরিকায় আমাদের ভ্রমণ শুরু হলো। প্রথম স্টপেজ : আর্জেন্টিনা।’ এক্সে একটি বিবৃতিও শেয়ার করেছেন তিনি। সেখানে বলা হয়েছে, শনিবার (আজ) আর্জেন্টিনার নেতা জেভিয়ার মিলেইর সাথে দেখা করবেন উরুতিয়া। আর্জেন্টিনার প্লাজা দে মায়ো চত্বরে সমবেত হতে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ১০ জানুয়ারি সামরিক বাহিনীর সমর্থনে নতুন মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাদুরোর শপথ নেয়ার কথা। তবে ৭৫ বছর বয়সী উরুতিয়া সঙ্কল্প করেছেন, দেশে ফিরে মাদুরোর জায়গায় তিনিই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।
ভেনিজুয়েলার পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বল্প পরিচিত সাবেক এই কূটনীতিকের একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবির নিচে ‘ওয়ান্টেড’ শব্দটি লেখা আছে। বিচার বিভাগীয় সূত্র এএফপিকে নিশ্চিত করেছে যে ছবি সংবলিত পোস্টারটি সারা দেশের বিমানবন্দর এবং পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে দেখানো হবে।
গত জুলাইয়ে ভেনিজুয়েলায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাদুরো বিজয়ী হন। দেশটির ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর কঠোর দমন-পীড়ন শুরু হলে গত সেপ্টেম্বরে বিরোধীদলীয় প্রার্থী গঞ্জালেজ উরুতিয়া স্পেনে পালিয়ে যান। ভেনিজুয়েলা কর্তৃপক্ষ উরুতিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ আনার পর গত ২০ ডিসেম্বর স্পেন তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে আশ্রয় দেয়।
জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাদুরোকে তৃতীয় মেয়াদে ছয় বছরের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করে ভেনিজুয়েলা কর্তৃপক্ষ। তবে বিরোধীরা তা প্রত্যাখ্যান করে। বিরোধীদের দাবি, তাদের কাছে ভোট কেন্দ্রের বিস্তারিত হিসাব আছে। আর সে সংখ্যা অনুযায়ী গঞ্জালেজ উরুতিয়াই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। এমন অবস্থায় ভোটের ফল প্রকাশের জন্য ভেনিজুয়েলার সরকারের ওপর দেশ-বিদেশ থেকে তীব্র চাপ তৈরি হয়। তবে সরকার সেসব চাপ প্রতিহত করেছে। নির্বাচনের পর ভেনিজুয়েলার সড়কে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে ২৮ জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে ২ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ। কারাগারে কমপক্ষে তিনজন বন্দী মারা গেছেন। আর গ্রেফতার হওয়াদের মধ্য থেকে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।