০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬
`
সিরিয়ার দেইর ইজ-জোর কারাগার

ভয়ঙ্কর বন্দী নির্যাতনের কেন্দ্র এখন ধ্বংসস্তূপ

সিরিয়ার দেইর ইজ-জোর কারাগারের একটি কক্ষ : ইন্টারনেট -

সিরিয়ার দেইর ইজ-জোর সেন্ট্রাল কারাগার। যেখানে বহু পুরুষ, নারী এবং শিশুসহ বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। সেটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাইরে থেকে পরিত্যক্ত দেখালেও এই কারাগারটিই দীর্ঘদিন ধরে ছিল ভয়ঙ্কর নির্যাতনের কেন্দ্র। সম্প্রতি বাথ শাসনের পতনের পর কারাগারটির ভেতরের অমানবিক চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। এই কারাগারের ওয়ার্ড এবং সেলগুলোতে বছরের পর বছর ধরে অমানবিক অবস্থায় রাখা হতো বন্দীদের। দেইর ইজ-জোর কারাগারে দীর্ঘ ৮৮ দিন আটক থাকা বাসিল কুয়েইহি নামের এক ব্যক্তি আনাদোলুকে বলেন, ‘প্রতিদিন আমাদের পেটানো হতো এবং টিয়ার গ্যাস দিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। বৃদ্ধ বন্দীদের মেঝেতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হতো’।
নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হতো এবং টয়লেটে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হতো না। একদিন আমরা বিদ্রোহ করি, সেদিন আমদেরই এক তরুণকে এই প্রাঙ্গণে স্নাইপারের গুলিতে হত্যা করা হয়’।
কুয়েইহি বলেন, ‘শুধু শীর্ষ নেতাদের নয়, যারা নির্যাতনে অংশ নিয়েছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই (বাশার আল-আসাদ) শাসন ছিল ভয়ানক নিষ্ঠুর’। এদিকে কারাগারের দেয়ালে এখনো লেখা রয়েছে, ‘ধ্বংস, অন্ধকার, মৃত্যু’। যা এর ভয়াবহ অতীতকে তুলে ধরে। বাথ শাসনের প্রতীকগুলোও কারাগারের বিভিন্ন কোণে দেখা যায়। ধ্বংসস্তূপে পরিণত এই কারাগারে পোড়া বাঙ্ক, ধোঁয়ায় কালো হয়ে যাওয়া দেয়াল এবং ভাঙাচোরা পুলিশি যানবাহন রয়েছে।
সিরিয়ায় গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদ তথা বাথ শাসনের পতনের পর দেইর ইজ-জোর কারাগারের বন্দীরা মুক্তির স্বাদ নিতে পারেন। বর্তমানে কারাগারটি বাথ শাসনের নিষ্ঠুরতার একটি ভয়ানক স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। সেই সাথে সাবেক বন্দীদের মধ্য থেকে ন্যায়বিচারের আহ্বান এখনো প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement