৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইসরাইলি হামলার সময় ইয়েমেন বিমানবন্দরে ছিলেন ডব্লিউএইচও প্রধান

সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ইয়েমেনের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে ইসরাইল বিমান হামলা করেছে। হুদাইদাহর রাস কুতাইব পাওয়ার স্টেশনে ইসরাইলি হামলার পর সেখান থেকে ধোঁয়া উড়ছে : ইন্টারনেট -


ইসরাইলের বিমান হামলার সময় ইয়েমেনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। এ সময় তার সাথে জাতিসঙ্ঘের আরো বেশ কয়েকজন স্টাফও ছিলেন। বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের রাজধানী সানার বিমানবন্দর, সেনাবাহিনীর ঘাঁটি ও অন্য একটি শহরের বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালায় ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। রাজধানী সানা ছাড়াও দেশটির বন্দরনগরী হুদাইদাহতেও বিমান হামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলি বিমান হামলার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান এবং জাতিসঙ্ঘের অন্যান্য কর্মী ইয়েমেনের সানায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া এক পোস্টে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, তিনি ও অন্য কর্মীরা বিমানে ওঠার সময় বিমানবন্দরটি বোমা হামলার শিকার হয়।

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের বিমানের একজন ক্রু সদস্য আহত হয়েছেন। বিমানবন্দরে দুইজন নিহত হয়েছেন।’
হাউছি চালিত মিডিয়ার মতে, বিমানবন্দরের পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অন্যান্য বন্দরে হওয়া এ হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইসরাইল এ হামলার দায় স্বীকার করার পর ইরানসমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এ হামলাকে ‘বর্বর’ বলে বর্ণনা করেছে।
অবশ্য নিহতরা বেসামরিক নাগরিক নাকি হাউছি বিদ্রোহী তা স্পষ্ট নয়। এক বিবৃতিতে ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তাদের ‘যুদ্ধ বিমানগুলো পশ্চিম উপকূল এবং ইয়েমেনে হুথি সন্ত্রাসী সরকারের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক হামলা চালিয়েছে।’
সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘সামরিক অবকাঠামোর’ পাশাপাশি হেজিয়াজ ও রাস কানাতিব পাওয়ার স্টেশন এবং পশ্চিম উপকূলে আল-হুদাইদাহ, সালিফ ও রাস কানাতিব বন্দরের অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে বলেও আইডিএফ জানিয়েছে।

ইসরাইলি বিমানবন্দরে হামলার দায় স্বীকার হাউছি বিদ্রোহীদের
এ দিকে টাইমস অব ইসরাইল জানায়, ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরকে লক্ষ করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা। এক বিবৃতিতে হাউছিরা দাবি করেছে, শত্রুর সেন্সরশিপ সত্ত্বেও ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সফল হয়েছে এবং অপারেশনের ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং বিমানবন্দরে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
এ দিকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, হাউছিদের ক্ষেপণাস্ত্রটি সফলভাবে বিমান প্রতিরক্ষা দ্বারা ভূপাতিত করা হয়েছে এবং বিমানবন্দরে কোনো প্রভাবের খবর পাওয়া যায়নি। শুধু ফ্লাইট আগমন ৩০ মিনিটের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। তা ছাড়া হাউছিরা তেল আবিব এলাকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। টানা কয়েক রাতে ইয়েমেন থেকে ইসরাইলে ড্রোন হামলা হলেও, গতকাল হাউছিদের হামলার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
হাউছিরা আরো বলেছে, তারা বেশ কয়েকটি ড্রোন হামলা চালিয়ে আরব সাগরে একটি কনটেইনার জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।

গোষ্ঠীটি ইসরাইলের ওপর তাদের আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, গাজার ওপর আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং অবরোধ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ইসরাইলে হামলা চলবে। হামাস এবং হিজবুল্লাহ নেতাদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহী নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরাইল। গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেন, আমরা হুতিদের ওপর কঠোর আঘাত হানব। তাদের নেতৃত্বকে নির্মূল করব। তেহরান, গাজা ও লেবাননে হানিয়া, (ইয়াহিয়া) সিনওয়ার ও (হাসান) নাসরুল্লাহকে যেভাবে (হত্যা) করেছি, হোদেইদা ও সানায় সেভাবেই করব।

 


আরো সংবাদ



premium cement