ট্রাম্পের মন্তব্যের পর গ্রিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষা বরাদ্দ বাড়াচ্ছে ডেনমার্ক
- বিবিসি
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করার পর ডেনমার্ক সরকার তাদের আর্কটিক ভূখণ্ডটির প্রতিরক্ষা বাজেট বিপুল পরিমাণ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। ডেনমার্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী টোলস লোন পওসেন মঙ্গলবার বলেছেন, এই প্যাকেজ ক্রোনায় ‘হাজার কোটির ওপরে’। ডলারে তা অন্তত দেড়শ’ কোটি। এ ঘোষণার সময়টিকে ‘ভাগ্যের পরিহাস’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। সোমবার ট্রাম্প বলেছেন, বিশাল এই দ্বীপটির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘পরম প্রয়োজনীয়তা’।
গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ দ্বীপটিতে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রকল্পে বিশাল সব স্থাপনা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দ্বীপটির অবস্থান উত্তর আমেরিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত নৌপথ এটি। এই দ্বীপে গুরুত্বপূর্ণ খনির মজুদ আছে। পওসেন জানিয়েছেন, এই প্যাকেজের আওতায় দু’টি নতুন পরিদর্শন জাহাজ, দু’টি নতুন দীর্ঘ পাল্লার ড্রোন কেনার এবং দু’টি অতিরিক্ত কুকুর টানা স্লেজ টিমের ব্যবস্থা করা যাবে।
এর আওতায় গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুকের আর্কটিক কমান্ডের কর্মী সংখ্যা বাড়ানো এবং দ্বীপটির তিনটি বেসামরিক বিমানবন্দরের মধ্যে একটিতে যেন এফ-৩৫ সুপারসনিক যুদ্ধবিমান উঠানামা করতে পারে সেই লক্ষ্যে উন্নয়ন করা হবে। তিনি বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে আর্কটিকে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করিনি, এখন আমরা জোরালো উপস্থিতির পরিকল্পনা করছি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ প্যাকেজের প্রকৃত পরিমাণ জানাননি, কিন্তু ডেনিশ গণমাধ্যমের হিসাবে এটি প্রায় ১২ থেকে ১৫শ’ কোটি ক্রোনা হতে পারে।
সোমবার ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোসালে বলেছেন, পুরো বিশ্বের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার জন্য গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্র অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা বলে অনুভব করে। ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট ইল বলেছেন, আমরা বিক্রির জন্য না। এরপর তিনি বলেছেন, বিশেষভাবে প্রতিবেশীদের সাথে সহযোগিতা ও বাণিজ্যের জন্য গ্রিনল্যান্ডের উন্মুক্ত থাকাই উচিত।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, গ্রিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষা জোরদারের এই পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে এবং এটিকে ট্রাম্পের মন্তব্যের সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। তারা বলেন, ডেনমার্ক এ পর্যন্ত গ্রিনল্যান্ডে তাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বেশ ধীর ছিল, কিন্তু দেশটি যদি অঞ্চলটির চারপাশের জলসীমায় চীনের ও রাশিয়ার আনাগোনা ঠেকাতে সক্ষম না হয় তাহলে ওই অঞ্চলে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ আরো বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দাবি বাড়তে থাকার কথা।