পাকিস্তানে সরকার ও বিরোধী দলের আলোচনা শুরু
- ডন
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পাকিস্তানে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে অবশেষে সরকার ও বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে দুই পক্ষের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে গত বছর গ্রেফতারের পর থেকে বিরোধী দলের সাথে সরকার ও রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত হয়ে উঠেছে। দলটির পক্ষ থেকে এই সময়ে একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলোই সহিংসতায় পরিণত হয়।
গত মাসে পিটিআইর ‘ফাইনাল কল’ নামে শক্তি প্রদর্শনের কর্মসূচির পর রাজনৈতিক উত্তেজনা আরো বাড়ে। দলটি দাবি করে, তাদের কমপক্ষে ১২ জন সমর্থক নিহত হয়েছেন। তবে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইমরান খান সম্প্রতি একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে আলোচনার জন্য প্রস্তাব দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার আয়াজ সাদিকের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি সরকারি কমিটি গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সরকারি কমিটিতে রয়েছেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ, সিনেটর ইরফান সিদ্দিকী, পিপিপি নেতা রাজা পারভেজ আশরাফ ও নবীদ কামার, এমকিউএম-পি নেতা ড. খালিদ মকবুল সিদ্দিকী, আইপিপি নেতা আলিম খান, পিএমএল-কিউ নেতা চৌধুরী সালিক হুসেইন এবং বালুচিস্তান আওয়ামী পার্টির সরদার খালিদ ম্যাগসি।
অন্য দিকে পিটিআইর কমিটিতে রয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আয়ুব খান, খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর, সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সাহিবজাদা হামিদ রেজা, পিটিআই মহাসচিব সালমান আকরাম রাজা এবং সংসদ সদস্য আসাদ কায়সার। এই বৈঠকে পিটিআই কমিটিকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে: দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের মুক্তি এবং ৯ মে দাঙ্গা ও ২৪ নভেম্বরের প্রতিবাদসংক্রান্ত ঘটনাগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্ত। এ দিকে কারাগারে থাকা ইমরান খান বতারিস্টার সাইফকে বিরোধী দলগুলোর ঐক্যের দায়িত্ব দিয়েছেন। সূত্র জানায়, বিরোধী নেতাদের সাথে দ্রুত আলোচনা চালিয়ে তাদের একত্রিত করার নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
ইমরান-বুশরার দুর্নীতি মামলায় রায় স্থগিত
ডন থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গতকাল সোমবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে ইসলামাবাদের জবাবদিহি আদালত (অ্যাকাউন্টেবিলিটি কোর্ট) রায় ঘোষণা স্থগিত করেছেন।
আদালতে বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা বলেন, ‘আজ রায় ঘোষণা করা হবে না। ছুটি (আদালতে) শুরু হচ্ছে এবং হাইকোর্টে একটি কার্যধারাও আছে।’ বিচারপতি আরো বলেন, শিগগিরই রায় ঘোষণার জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
আনুষ্ঠানিকভাবে আজ ২৪ ডিসেম্বর থেকে আদালতে শীতকালীন ছুটি শুরু হচ্ছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ ছুটি চলবে। রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বর্তমানে দেশটির রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। ১৯ কোটি পাউন্ড তছরুপের অভিযোগে তাঁর ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি করেছিল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। এ মামলায় গত বছরের মে মাসে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাধারণ নির্বাচনের পরপরই গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির এই মামলায় ইমরান ও বুশরাকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান ও বুশরা বিবি বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কোটি কোটি রুপি অর্থ এবং অনেক জমি নিয়েছিলেন। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী পিটিআই সরকারের সময় ব্রিটেন পাকিস্তানকে যে পাঁচ হাজার কোটি রুপি পরিমাণ অর্থ ফেরত দিয়েছিল, তা বৈধ করতে এসব লেনদেন হয়েছে। ডিসেম্বরে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ইমরান, তার স্ত্রী বুশরাসহ আটজনের বিরুদ্ধে আল–কাদির বিশ্ববিদ্যালয়সংক্রান্ত দুর্নীতির একটি অভিযোগ আনে।
এনএবির জমা দেওয়া রেফারেন্সে অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে কারাগারে থাকা ইমরান করাচির বাহরিয়া টাউন কোম্পানির মালিকানাধীন জমি বেচাকেনার কাজে ব্যবহৃত একটি অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তরে ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ রেখেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা