হামাস-হিজবুল্লাহ-সিরিয়ার পর ইরানে দৃষ্টি দেবেন নেতানিয়াহু
রয়টার্সের বিশ্লেষণ- ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
হামাস-হিজবুল্লাহ নির্মূলের লক্ষ্যে এবং সিরিয়ায় দখলে সময় দিচ্ছে ইসরাইল। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এরপর পুরোপুরি ইরানের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করবেন নেতানিয়াহু। গতকাল শুক্রবার রয়টার্সের এক বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্টে বলা হয়, ২০২৫ সাল হবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার দেশের প্রধান শত্রু ইরানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর।
কয়েক দশক ধরে ইরান যেসব জোট গড়ে তুলেছিল প্রায় সবগুলোই ভেঙে পড়েছে। ইরানের প্রভাব দুর্বল হওয়ার সাথে সাথে মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে নিজেদের তৈরি করছে ইসরাইল। ২০২৪ সালে আসাদের পতন, হামাস ও হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের নির্মূল এবং তাদের সামরিক কাঠামোর ধ্বংস করতে পারা নেতানিয়াহুর জন্য বিশাল সাফল্য।
রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হয়, নেতানিয়াহু কিছু কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন। গাজার ওপর ইসরাইলের সামরিক নিয়ন্ত্রণ শক্ত করা, ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাক্সক্ষা প্রতিহত করা এবং তেহরানের মিত্রদের (ফিলিস্তিনের হামাস, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ) দুর্বল করে ফেলা। নেতানিয়াহু মনে করেন, ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাক্সক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ইসরাইলের জন্য হুমকি। ইরানকে প্রতিহত করার সব ধরনের পরিকল্পনা আঁটছেন তিনি।
মধ্যপ্রাচ্যের পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের সামনে দুটি রাস্তা খোলা আছে, হয় তাদের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে, নয়তো পরমাণু কার্যক্রম কমিয়ে এনে আলোচনায় সম্মত হতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের পরিচালক জুস্ট আর হিলটারম্যান মনে করেন, ইরান ইসরাইলের হামলার মুখে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আশ্চর্য হব না, যদি ইসরাইল ইরানে হামলা চালায়। তবে এতে ইরানের সাথে তাদের সংঘাতে সমাপ্তি আনবে না।’ ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক গাসসান আল-খাতিব বলেন, যদি ইরানিরা পিছু না হটে, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু হামলা করতে পারে, কারণ তাদের সামনে আর কোনো বাধা নেই। তবে ইরানের বর্তমান নেতৃত্ব সামরিক সংঘর্ষ এড়াতে ইচ্ছুক হতেও পারে।
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ২০১৫ সালে ইরানের সাথে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের একটি চুক্তি হয়। এ চুক্তির অধীনে তেহরানের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুুলে দেওয়া হয়। বিনিময়ে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির সীমাবদ্ধ করে আনতে বলা হয়। তবে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে চুক্তি থেকে সরে আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর ইরানও ওই চুক্তির বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতে থাকে। এসব কারণে ধারণা করা হচ্ছে, এ মেয়াদে ইরানের তেল শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়াতে পারেন ট্রাম্প।