দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন প্রত্যাহার
প্রেসিডেন্ট ইউন সুকের বিরুদ্ধে অভিসংসনের আহ্বান আইনপ্রণেতাদের- রয়টার্স
- ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জনতার বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। এ দিকে সামরিক আইন জারি ও তা প্রত্যাহারসংক্রান্ত বিতর্ককে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে অভিশংসনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। এর আগে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে টিভিতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আচমকাই দেশে জরুরি সামরিক আইন জারি করেন ইউন সুক-ইওল। উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হাত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সুরক্ষায় এবং রাষ্ট্রবিরোধী নানা শক্তিকে নির্মূল করতে এ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
ইউনের পিপল পাওয়ার পার্টি এবং প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে আগামী বছরের বাজেট বিল নিয়ে মতবিরোধের মধ্যে এমন পদক্ষেপের ঘোষণা এসেছিল। সামরিক আইন জারির পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় নেমে আসে। তারা কোরিয়ার আইনসভা জাতীয় পরিষদের বাইরে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পার্লামেন্টের আশপাশে নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির আইনপ্রণেতারা সর্বসম্মতভাবে প্রেসিডেন্টের সামরিক আইন জারির ফরমান প্রত্যাখ্যান করেন। গতকাল বুধবার ভোর নাগাদ আইনসভা সামরিক আইন বাতিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ভোর সাড়ে ৪টায় আবার টেলিভিশন ভাষণে এসে প্রেসিডেন্ট ইউন বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে জাতীয় পরিষদ থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এবং আমরা সামরিক আইন বলবৎ করতে মোতায়েন করা সামরিক বাহিনীকে প্রত্যাহার করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জাতীয় পরিষদের আহ্বান মেনে নেব এবং মন্ত্রিসভা বৈঠকের মাধ্যমে সামরিক আইন তুলে নেবো।’ সরকারের এই ‘ইউ-টার্নে’ প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে রাস্তায় জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। জনতা চিৎকার করে বলছিল, ‘আমরা জিতেছি!’ রয়টার্স জানিয়েছে, একজনকে আনন্দে ড্রাম বাজাতেও দেখা দেখা গেছে। সামরিক আইন মানে জরুরি সময়ে সামরিক কর্তৃপক্ষের শাসন, এবং এর অর্থ স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার স্থগিত করা।
১৯৮৭ সালে গণতন্ত্রে ফেরার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় আর সামরিক আইন জারির প্রয়োজন পড়েনি। ১৯৭৯ সালে এক অভ্যুত্থানে দীর্ঘ দিনের সামরিক শাসক পার্ক চুং নিহত হওয়ার পর শেষবার দেশটিতে সামরিক আইন জারি করা হয়েছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ৪৫ বছর পর আবার এই দমনমূলক আইন জারিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল দেশটির মানুষ। গত এপ্রিলে দেশটিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিরোধী দল বিপুল বিজয় অর্জনের পর থেকেই মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল ইউনের সরকার।
এ ছাড়া প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগও ওঠে। এসব অভিযোগের মধ্যে ফার্স্ট লেডির ‘ডিও’র ব্যাগ উপহার নেয়া এবং শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগও রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা