২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইউক্রেন নিয়ে ন্যাটো মহাসচিবের সাথে কথা বলবেন এরদোগান

এরদোগান ও মার্ক রুটে -

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সাথে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। আজ সোমবার ন্যাটো মহাসচিবের তুরস্ক সফরের কথা রয়েছে। এ সময় তার সাথে বৈঠক করবেন এরদোগান। মার্কিন ও ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার গভীরে কিয়েভের হামলার প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে একটি নতুন হাইপারসনিক মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছিল মস্কো। এই হামলা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ইউক্রেনের ওপর মস্কোর চালানো সর্বাত্মক আক্রমণের বৃদ্ধিকেই চিহ্নিত করে।
তখন রুশ আক্রমণের নিন্দা করেছিল ন্যাটো সদস্য দেশ তুরস্ক। তারা বলেছিল, ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে দেশটি এবং তারা কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দিয়েছে। তবে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন করলেও রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে তুরস্ক। মস্কো ও কিয়েভ উভয়ের সাথে কৃষ্ণসাগরেও সীমানা রয়েছে দেশটির। এগুলোর সাথে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা, শক্তি ও পর্যটন সম্পর্ক রয়েছে আঙ্কারার।
বুধবার এরদোগানের কার্যালয়ের একটি বিবৃতিতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলা হয়, এটি সঙ্ঘাতকে আরো উস্কে দেবে। মস্কো বলেছে, ইউক্রেনকে রাশিয়ার গভীরে পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের সবুজ সঙ্কেত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়ার সাথে সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতির পরিবর্তনগুলোর অনুমোদন দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভলাদিমির পুতিন, যা প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় দেশটিতে আত্মরক্ষায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তুর্কি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ন্যাটো মহাসচিব ও এরদোগানের মধ্যকার অনুষ্ঠিতব্য সোমবারের আলোচনায়, ন্যাটো মিত্রদের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্রয়ে বাধা অপসারণ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সামরিক জোটের যৌথ লড়াই নিয়েও আলোচনা করবেন তারা।
কুরস্ক অঞ্চলের ৪০ ভাগ ভূখণ্ড হারিয়েছে ইউক্রেন
এ দিকে রয়টার্স জানায়, গত আগস্টে এক অতর্কিত হামলায় রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের দখল নেয় ইউক্রেন। তবে ওই সময়ের পর থেকে কুরস্কে একের পর এক পাল্টা হামলা চালিয়ে গেছে রাশিয়া। যার ফলে দখল অঞ্চলের ৪০ ভাগেরও বেশি অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে ইউক্রেন। এমনটাই বলেছে ইউক্রেনের এক শীর্ষ সামরিক সূত্র। কিয়েভের বাহিনী অতর্কিত হামলা চালিয়ে আড়াই বছরের এই যুদ্ধে প্রথমবারের মতো মস্কোকে অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলে দেয়।
তবে এই সূত্র (ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফের সদস্য) বলছেন, ইউক্রেন কুরস্কের দখল নেয়ার পর রাশিয়া সেখানে প্রায় ৫৯ হাজার সৈন্য মোতায়েন করেছে। তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে আমাদের নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ এক হাজার ৩৭৬ বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড ছিল। তবে এখন দখলে থাকা ভূখণ্ড অনেকটাই কমে এসেছে। শত্রুপক্ষ পাল্টা হামলার সংখ্যা ও মাত্রা বাড়াচ্ছে। এখন আমরা প্রায় ৮০০ বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছি। সামরিক সক্ষমতার দিক দিয়ে যতক্ষণ বিষয়টি যৌক্তিক থাকবে, ততক্ষণ আমরা এই ভূখণ্ড দখলে রাখব।’
ইউক্রেনের কুরস্ক অভিযান ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রুশ ভূখণ্ডে কোনো বিদেশী শক্তির প্রথম স্থল অভিযান, যা মস্কোকে পুরোপুরি অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলে দেয়। কিয়েভের উদ্দেশ্য ছিল কুরস্কে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার চলমান হামলা থামানো।


আরো সংবাদ



premium cement