১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অ্যারিজোনাতে পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ জয় পেয়েছেন ট্রাম্প

সব মিলিয়ে ট্রাম্প পেলেন ৩১২টি ইলেকটোরাল ভোট, হ্যারিস ২২৬টি
অ্যারিজোনাতে পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ জয় পেয়েছেন ট্রাম্প -

অ্যারিজোনায় জয়ের মুখ দেখার মধ্য দিয়ে দোদুল্যমান সাত অঙ্গরাজ্যেই রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখে হাসি ফুটল। শনিবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটির ফল প্রকাশের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর্ব শেষ হলো। ২০১৬-২০ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা ট্রাম্পই যে আবার হোয়াইট হাউজে যাচ্ছেন, তা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ৫ নভেম্বর ভোটের রাতেই। নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট সেদিনই নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প।
এবারের নির্বাচনে যে সাতটি অঙ্গরাজ্য ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল, তার মধ্যে চারটির ফল ঘোষণা তখনো বাকি ছিল। এর মধ্যে সর্বশেষ রাজ্য অ্যারিজোনাতেও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বিপক্ষে জয় পেয়েছেন ট্রাম্প। ৭০ বছরের ইতিহাসে ২০২০ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় ডেমোক্র্যাট হিসেবে সেখানে জো বাইডেন জিতেছিলেন। ঘোষিত ফল অনুযায়ী, অ্যারিজোনার ১১টিসহ সবমিলিয়ে ৩১২টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প, যেখানে হোয়াইট হাউজের মসনদে যেতে প্রয়োজন ছিল ২৭০টি ভোট। এর আগে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ৩০৪টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছিলেন এই রিপাবলিকান।
অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট হ্যারিসের ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৬। তিনি গেল জুলাইয়ে দলীয় প্রার্থী ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের স্থলাভিষিক্ত হন। বয়সের কারণে ভোটের দৌড় থেকে ছিটকে পড়া বাইডেন আগামী বুধবার ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। খবরে বলা হয়েছে, দোদুল্যমান জর্জিয়া, পেনিসিলভেইনিয়া, মিশিগান, উইসকনসিনসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ রাজ্যের বেশির ভাগে ট্রাম্পকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। চার বছর আগের নির্বাচনে এসব রাজ্যে জয় দেখেছিল ডেমোক্রেটিক পার্টি।
ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি আগের মেয়াদে দুইবার অভিশংসিত হয়েও এবার তুলনামূলক বেশি ব্যবধানে জয় পেয়েছেন ট্রাম্প। কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটেছে, তার মধ্য দিয়ে সবশেষ চার নির্বাচনে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টি একবার জয়, একবার পরাজয় দেখল। ঊনিশ শতকের শেষ দিক থেকে এমনটা আর আগে দেখেনি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল।
বিবিসি লিখেছে, কয়েকটি রাজ্যে ফল ঘোষণা হতে তুলনামূলক বেশি সময় লেগেছে, যার মধ্যে অ্যারিজোনায় কয়েক দিন লেগে গেল। ভোটের ফলে ট্রাম্প জয়ী হলেও তিনি এখনো প্রেসিডেন্ট নন; এখন পর্যন্ত তিনি কেবল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, আর তার রানিং মেট জে ডি ভ্যান্স নির্বাচিত হয়েছেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট। আগামী ২০ জানুয়ারি শপথগ্রহণের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্সির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
সিনেটের পর প্রতিনিধি পরিষদও যাচ্ছে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে
এদিকে রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রিপাবলিকানরা। ফলে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য তার অ্যাজেন্ডা এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে যাচ্ছে। এডিসন রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, ৪৩৫ সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা ইতোমধ্যে ২১৩টি আসন জিতেছে। শনিবার রাতে এডিসন রিসার্চের পূর্বাভাসে জানানো হয়, ড্যান নিউহাউস যথেষ্ট ভোট পাওয়ায় কলোরাডোর থার্ড কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্টে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে।
প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিতে রিপাবলিকানদের আর পাঁচটি আসন দরকার। তারা ইতোমধ্যে ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে সিনেটের দখল নেয়ার জন্য যথেষ্ট আসন লাভ করেছে। তবে শুক্রবার রাতে এডিসন রিসার্চ জানায়, নেভাদায় ডেমোক্র্যাট সিনেটর জ্যাকি রোজেন পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। এডিসন রিসার্চের তথ্যমতে, ডেমোক্র্যাটরা এখন পর্যন্ত ২০৫টি আসন জিতেছে। প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ পেতে হলে বাকি ১৭টির মধ্যে ১৩টি আসনে জয় প্রয়োজন তাদের।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় ও সিনেটে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রতিনিধি পরিষদেও তাদের আধিপত্য নিশ্চিত হলে, কর ও ব্যয় সংকোচন, জ্বালানি খাতে নিয়ন্ত্রণ শিথিলকরণ ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের মতো একটি বিস্তৃত অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ পাবেন ট্রাম্প। প্রতিনিধি পরিষদের বাকি ১৭টি আসনের বেশির ভাগই পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতে রয়েছে। সেখানে সাধারণত ভোট গণনার গতি দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় ধীর। আগামী সপ্তাহে রিপাবলিকান সিনেটররা সিনেটে দলের নেতৃত্বে কে থাকবে তা নির্ধারণ করবেন। সেখানে এই দায়িত্ব নেয়ার জন্য বিবেচনায় রয়েছেন জন থুন, জন কর্নিন ও রিক স্কট।


আরো সংবাদ



premium cement