২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিষাদ সিন্ধু’র রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭১তম জন্মবার্ষিকী আজ

-

কালজয়ী উপন্যাস বিষাদ সিন্ধু’র রচয়িতা ও মুসলিম সাহিত্য স¤্রাট মীর মশাররফ হোসেনর ১৭১তম জন্মবার্ষিকী আজ।

মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া গ্রামের মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে পৈত্রিক নিবাসে মারা যান তিনি। পরে সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়।

তার শৈশব, শিক্ষা, সাহিত্য রচনা ও কর্মজীবনের পুরো সময় কাটে পদমদির জমিদার মীর আব্দুল লতিফের জমিদারির স্টেটে।

পরে তার স্মৃতি ধরে রাখতেই ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদীতে ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সালে তৈরি হয় এ সাহিত্যিকের স্মৃতিকেন্দ্রটি। কিন্তু স্মৃতিকেন্দ্রটি নির্মাণের এক যুগ অতিবাহিত হলেও তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। স্মৃতিকেন্দ্রটির সার্বিক তত্বাবধানে রয়েছে বাংলা একাডেমী। অন্যান্য বছর বাংলা একাডেমী জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকীতে এক ঘন্টার একটি আলোচনা সভা দায়সারাভাবে পালন করলেও এবার কোনো আয়োজনই রাখেনি।

বর্তমানে স্মৃতিকেন্দ্রের গ্রন্থাগারে তার শ্রেষ্ঠ লেখা ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসের ইংরেজি ভার্সনের এক কপি ছাড়া বাংলা ভার্সনের কোনো কপি নেই। এমনকি তার লেখা অন্য কোনো বইই নেই। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীসহ অনেকে মশাররফ হোসেনের লেখা বইসহ তার স্মৃতি সংরক্ষেণের দাবি জানিয়ে এলেও কোনো কাজে আসেনি।

মীর মশাররফ হোসেনের স্মৃতিবিজড়িত কেন্দ্রটিতে প্রতিদিন জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। দর্শনার্থীরা মীর মশাররফ হোসেন, তার স্ত্রী ও এক ভাইসহ তার স্ত্রীর সমাধীস্থলসহ কেন্দ্রটির বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখলেও তার জীবন ও লেখা সম্পর্কে জানতে কেন্দ্রের গ্রন্থাগারে গিয়ে বিষাদ সিন্ধু ছাড়া পান না অন্য কোনো বই।

কালজয়ী এ সাহিত্যিকের স্মৃতিকেন্দ্রে রয়েছে মীর মশাররফ হোসেন, তার স্ত্রী বিবি কুলসুম, ভাই মীর মোকাররম হোসেন ও তার স্ত্রী বিবি খোদেজা বেগমের সমাধীসৌধ। রয়েছে মশাররফের ভাস্কর্য, সংগ্রহশালা, সভাকক্ষ, গ্রন্থাগার, পাঠাগার, অভ্যর্থনা কক্ষ, ভিআইপি রুম ও আবাসন কর্মকর্তার কক্ষ।

দর্শনার্থীরা জানান, প্রিয় কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থানে আসতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। তবে তার একমাত্র স্মৃতিকেন্দ্রটি এখানে অবস্থিত হলেও কেন্দ্রটির গ্রন্থাগারে রয়েছে তার লেখা একটিমাত্র বই। এর চেয়ে হতাশার আর কী হতে পারে?

স্মৃতিকেন্দ্রের অফিস সহকারী বাবুল আক্তার জানান, পর্যায়ক্রমে তার সব লেখা আনা হবে। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমীকে জানানো হয়েছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিকেন্দ্রে যে লোকবল থাকা প্রয়োজন, সে তুলনায় লোকবল নেই। উদ্বোধনের পর থেকে কোনো সংস্কার কাজও হয়নি। যে উদ্দেশ্যে স্মৃতিকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে তার কিছুই বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো: শওকত আলী জানান, মীর মশাররফ হোসেনের লেখা প্রতিটি বইয়ের ৫টি করে কপি দ্রুত কিনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্মৃতিকেন্দ্রে সংরক্ষণের জন্য দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement