২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অ্যাম্বুল্যান্স আটকে সিংহ দলের গর্জন, ভেতরেই ফুটফুটে সন্তানের জন্ম

- ছবি : সংগৃহীত

ঠিক যেন হডিউড ছবির দৃশ্য। অ্যাম্বুল্যান্সের বাইরে পাহারারত একদল সিংহ। আর ভিতরে নিশ্চিন্তে ভূমিষ্ঠ হচ্ছে শিশু। পশুরাজ আর মানুষের সহাবস্থান। ভাবতেও অবাক লাগে। এমনই দৃশ্য বাস্তবের মাটিতে ধরা পড়ল। ঘটনাস্থল ভারতের গুজরাটের গীর অরণ্য।

বুধবার রাতে হঠাৎই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় বছর তিরিশের আফসানা রফিকের। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ডাকা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। আফসানার গ্রাম ভাখা থেকে হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে যাত্রা শুরু হয় অন্তঃসত্ত্বার।

কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই যন্ত্রণা তীব্রতর হয়ে ওঠে। তখনও ৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা বাকি। রসুলপুর পাটিয়া এলাকাতে আসতেই ব্রেক কষতে হয় অ্যাম্বুল্যান্স চালককে। কেন? রাতের অন্ধকারে পথ আটকে বসে রয়েছে একদল সিংহ! শিহরণ জাগানোর মতোই পরিস্থিতি।

বিশ্রামরত সিংহের দলকে দেখে ভালই বোঝা যাচ্ছে, অ্যাম্বুল্যান্সকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য সেখান থেকে উঠতে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নয় তারা। এদিকে প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন আফসানা। তাহলে উপায়? কীভাবে এগোনো যায়?

অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী জগদীশ মাকওয়ানা ঠিক করেন, আর বিলম্ব না করে সেখানেই প্রসব করাতে হবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। এক আশাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সফলভাবেই প্রসব করান তিনি। গভীর সিংহ গর্জনের মধ্যেই জন্ম নিল ফুটফুটে কন্যা সন্তান। গর্বের জন্মই বটে। মা ও সন্তান দু’জনই সুস্থ।

সেই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে জগদীপ বলেন, বাইরে একদল সিংহ বসে। মাঝেমধ্যে গর্জেও উঠছে তারা। বুক দুরুদুরু অবস্থা। কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে বনদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে ফোন করেন তিনি।

কর্মকর্তা জানান, সিংহরা নিজে থেকে পথ না ছাড়লে তারা যেন তাদের সরানোর চেষ্টা না করেন। অ্যাম্বুল্যান্স যেন সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। অগত্যা ফোনে ডাক্তারের পরামর্শ মতোই অস্ত্রোপচার শুরু করেন জগদীপ। বাইরে সিংহের দল আর ভিতরে শিশুর ডেলিভারির প্রক্রিয়া। অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। স্বস্তি মিলল শিশু ভূমিষ্ঠ হতেই। তবে বাচ্চাটি জন্মানোর পরও ২০-২৫ মিনিটে সেখানেই আটকে ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। সিংহবাহিনী পথ ছাড়লে অবশেষে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেয় গাড়ি। সংবাদ প্রতিদিন।


আরো সংবাদ



premium cement