২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

হুমায়রা হিমু’র আত্মহত্যা নিয়ে যা জানা গেল

হুমায়রা হিমু’র আত্মহত্যা নিয়ে যা জানা গেল - সংগৃহীত

জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি ওরফে উরফি জিয়াকে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।

গতকাল (২ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা নুসরাত হিমু আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। ওই ঘটনায় ভিকটিম হিমুর খালা রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন; যার মামলা নম্বর-০২, তারিখ ০২ নভেম্বর ২০২৩। ওই ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়। র‌্যাব বর্ণিত ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজদারী বৃদ্ধি করে।

গত মধ্যরাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আত্মহত্যার প্ররোচণার দায়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি ওরফে উরফি জিয়া (৩৭)-কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত হিমুর আত্মহত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম হুমায়রা নুসরাত হিমু একজন জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী এবং প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে অভিনয় করেছেন। ২০১৪ সালে হুমায়রা হিমুর খালাতো বোন এর সাথে গ্রেফতারকৃত জিয়াউদ্দিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যা জনিত কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পারিবারিক আত্মীয়ের সম্পর্কের সুবাধে গ্রেফতারকৃত জিয়াউদ্দিন -এর সাথে ভিকটিম হিমুর পরিচয় হয়। হিমুর খালাতো বোনের সাথে জিয়াউদ্দিন -এর বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও হিমু ও জিয়াউদ্দিনের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে গ্রেফতারকৃত জানায়।

পরবর্তীতে গ্রেফতার জিয়াউদ্দিন অন্যত্র বিবাহ করলেও হিমুর সাথে সে বিভিন্নভাবে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখতো এবং বিগত ৪ মাস পূর্বে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরী হয়। এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত জিয়াউদ্দিন ভিকটিমকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়মিত তার বাসায় যাতায়াত করতো বলে জানায়। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ও বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হতো।

গ্রেফতারকৃত আরো জানায়, ভিকটিম হিমু পূর্বেও ৩/৪ বার আত্মহত্যা করবে বলে গ্রেফতারকৃত জিয়াউদ্দিনকে জানালেও সে পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেনি। এবারো পূর্বের ন্যায় ভিকটিম আত্মহত্যা করার ব্যাপারে গ্রেফতারকৃত জিয়াউদ্দিনকে জানালে সে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। কিন্ত ভিকটিম হিমু একটু পর বেধে রাখা রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিলে গ্রেফতারকৃত জিয়াউদ্দিন তাকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় সে পাশের রুমে থাকা ভিকটিম হিমুর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনে। পরবর্তীতে মিহির রান্নাঘর থেকে একটি বটি এনে রশি কেটে তাকে নিচে নামায়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত জিয়াউদ্দিন, বাসার দারোয়ান এবং মিহিরের সহায়তায় হিমুকে বাসা থেকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন।

গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement