ওলামা সম্মেলন : সরকারের কাছে ৪ দাবি আলেমদের
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১৬:১১
মিরপুরে আলেমদের আয়োজনে বুধবার ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে ওলামায়ে কেরামের করণীয়’ শীর্ষক একটি বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিরপুর ১৩-এর পিএসসি কনভেনশন হলে বুধবার সন্ধ্যায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মূখ্য সচিব, আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মিরপুরের ওলামায়ে কেরামের পক্ষে দারুল উলুম ঢাকার প্রিন্সিপাল মুফতী রেজাউল হক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ নিজের বক্তৃতায় অতিথিদের উদ্দেশ্যে করে সরকারের কাছে চারটি বিশেষ দাবি জানান। দাবিগুলো হলো-
১. মিরপুর ১৩-১৪ এলাকায় হাউজিংয়ের পক্ষ থেকে যাদেরকে বাড়ি দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কেউ নেই। অথচ বেশ কাছাকাছি বৃহৎ তিনটি কওমী মাদরাসা থাকা সত্ত্বেও মিরপুর ১৩-এর ঢাকা মডেল ডিগ্রী কলেজ সংলগ্ন একটি মন্দির (ঢাকা মহানগর উত্তর কেন্দ্রীয় মন্দির) স্থাপিত হয়েছে, যেখানে সাধারণত বহিরাগত হিন্দুরা এসে পূজা-অর্চনা করে থাকে। এলাকায় কোনো হিন্দু না থাকার পরও মন্দির নির্মাণকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবেচনা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এখানে বড় ধরণের সাম্প্রদায়িক অঘটন ঘটারও আশঙ্কা করছেন বোদ্ধামহল। তাই মিরপুরের আলেমদের দাবি, যে এলাকায় হিন্দু ধর্মের অনুসারী রয়েছেন, সেখানে আরো বড় জায়গা বরাদ্দ দিয়ে হলেও মন্দিরটি স্থানান্তরিত করা হোক।
২. স্বাধীনতার পর থেকে মিরপুরে গড়ে ওঠা বেশিরভাগ মসজিদ-মাদরাসা নির্মিত হয়েছে সরকারি বিভিন্ন জায়গায়। সরকার যেহেতু জনগণের। তাই সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা মসজিদ-মাদরাসাগুলো নিরাপদ রাখাও তাদের দায়িত্ব। যেহেতু এগুলোর সাথে জনগণের ধর্মীয় আবেগ জড়িত তাই সরকার এগুলো উচ্ছেদ করতে পারবে না- এটাই বাস্তবতা। এজন্য জায়গাগুলো মসজিদ-মাদরাসার নামেই ‘নামমাত্র’ মূল্যে বরাদ্দ দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রশান্ত চিত্তে মাদরাসা-মসজিদে কোরআন-হাদিস চর্চা ও ইবাদত-বন্দেগী করতে পারবেন। উল্লেখ্য, বর্তমান শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের মাধ্যমে সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত লিখিতভাবে একটি আবেদনও (ডিও) করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে আবেদনের কোনো ইতিবাচক প্রতিফলন দেখা যায়নি।
৩. ঢাকা শহর সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করার লক্ষ্যে মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সভায় অন্যান্য নেতাকর্মীর কর্মকাণ্ডের প্রসংশা করা হয়েছে। কিন্তু এখানে বড় যে সমস্যা সেটি হলো- তারা যেখানেই যান, আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে যান- এর ফলে ফুটপাত ও অন্যান্য অসুবিধাগুলো স্বচক্ষে তারা দেখতে পান না। মনে করেন, রাস্তা-ঘাট হয়ত সবসময় এরকম-ই পরিচ্ছন্ন থাকে, অথচ বাস্তবতা এর বিপরীত; মেয়র কিংবা নেতাদের আগমনের সংবাদ শুনে স্থানীয় চাঁদাবাজ ও অবৈধ দখলদাররা আগে থেকেই ফুটপাত খালি করে রাখে। আলেমরা দাবি করেন, মেয়র যেন আসার আগে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেন এবং হঠাৎ এসে রাস্তা-ঘাটের বাস্তব রূপ অবলোকন করেন।
৪. গত প্রায় দুই বছর আগে তাবলীগ-জামাত দুটি দলে বিভক্ত হয়ে যায়। ফলে আলেমদের সমর্থিত দলটি বর্তমানে দাওয়াতি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে গিয়ে অপর পক্ষের দ্বারা নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। বেশকিছু ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন ও মসজিদ সংশ্লিষ্ট অনেকের চাকরি পর্যন্ত হারাতে হয়েছে। এটিরও একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান দাবি করেছেন তারা।
সম্মেলন শেষে মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি দিলাওয়ার হুসাইনের মুনাজাতের মাধ্যমে সভাটি শেষ হওয়ার আগে দেশের বরেণ্য আলেমগণ নির্ধারিত বিষয়ে আলোচনা করেন।
তাদের মধ্যে, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার যুগ্ম মহাসচিব মুফতি নুরুল আমিন, বেফাকুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়ার মহাসচিব মুফতি মুহাম্মাদ আলী, জামেউল উলুমের মুহতামিম মুফতি আবুল বাশার নোমানী, ইনকিলাবের সহযোগী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ ঢাকার পরিচালক মুফতী মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমী ও পটিয়া মাদরাসার মাওলানা উবায়দুল্লাহ হামজা প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা