২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

ময়মনসিংহে ৩৪ শহীদ পরিবারকে জামায়াতের আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠান - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি অ্যধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, জালেমদের রেখে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। একটা যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে দীর্ঘায়িত করা যাবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ময়মনসিংহ জেলার ৩৪ জন শহীদ পরিবারের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ময়মনসিংহ জেলার ৩৪ জন শহীদ পরিবারকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে দুই লাখ টাকা নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

শুক্রবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় জেলা আমির আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে ও মহানগর আমির কামরুল আহসান এমরুলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিচালক ড. সামিউল হক ফারুকী, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া।

বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ জেলা আমির রমজান আলী, জামালপুর জেলা আমির মাওলানা খলিলুর রহমান, শেরপুর জেলা আমির মাওলানা হাফিজুর রহমান, নেত্রকোনা জেলা আমির মাওলানা হারিছ আহমেদ, মাওলানা নাজমুল হক, মহানগর সম্পাদক অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার, জেলা সম্পাদক মাওলানা মোজাম্মের হক আকন্দ, জেলা নায়েবে আমির কামরুল হাসান মিলন, মহানগর নায়েবে আমির আসাদুজ্জামান সোহেল।

শহীদ পরিবারের পক্ষে ঈশ্বরগঞ্জের আব্দুল মজিদ ও নিহত সাগরের পিতা আসাদুজ্জামান জামায়াতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের জেলা ও মহানগর নেতারা এবং শহীদ পরিবারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৬২ জন শহীদ হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই শ্রমিক শ্রেণির। যারা জালেম সরকারকে বিতাড়িত করে শহীদ হয়েছেন তাদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেথা থাকবে। আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কেয়ার টোকার সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে মানুষ নিজের ভোট নিজেই দিতে পারতেন। বিগত সরকার কেয়ারটেকার সরকার বাতিল করে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করেছে। এজন্যই ছাত্ররা গণআন্দোলনে জালেম সরকারকে চিরতরে বিতাড়িত করেছে।

তিনি আরো বলেন, ইসলাম ও জুলুম এক সাথে চলতে পারে না। জুলুম থাকলে ইসলাম থাকবে না। আর যদি ইসলাম থাকে তাহলে জুলুম থাকবে না। সকল প্রকার জুলুম ও অন্যায় বন্ধ করে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই সকল মানুষ নিরাপদ ও সুখ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

আপনারা কোনটা চান জানতে চাইলে সমস্বরে সবাই বলেন, ইসলাম চাই।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জালেমদেরকে অপসারণ করে জনগণের অধিকার যারা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এমন লোকদের বাছাই করে সে সব জায়গায় সেট করতে হবে। এজন্য তাদেরকে বাছাই করতে সুযোগ দিতে হবে। এখন ছাটাই করার পালা চলছে। আবার বাছাই করে পূরণ করতে হবে। এ কাজগুলো করতে কিছুটা সময় লাগবে। কেউ কেউ চায় খুব তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিয়ে দিক। তাড়াতাড়ি নির্বাচন আমরাও চাই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে চোর, ডাকাত এবং জালেমদের রেখেই নির্বাচন হবে। তখন এটা নির্বাচন হতে পারে না। এগুলোকে অপসারণ করে সমাজে একটা স্থিতিশীলতা আনার পরই নির্বাচন হলেই মানুষের হক আদায় হবে।

তিনি বলেন, আজকে সাংবাদিকদের অধিকার নেই, ছিল না, এখনো নেই। এটাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার আমাদের চলাফেরা করার অধিকার, অনেক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সেই সব অধিকারকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, একটু সময় দিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, যুক্তিসঙ্গত সময় দিতে হবে। এবং এটা শেষ করেই আমাদের নির্বাচন দিতে হবে। কিন্তু যুক্তিসঙ্গত মানেই এই নয় অনির্দিষ্টকালের জন্য থেকে যাবে তা কিন্তু হবে না। একটা যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে এটাই আমাদের দাবি।’

জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন, তারা শহীদ হয়েছেন। এটা নি:সন্দেহে গণহত্যা। জাতিসঙ্ঘের তত্বাবধানে এসব গণহত্যার তদন্ত হবে। বিচারে হত্যাকারিদের ফাঁসি হবে এটাও নিশ্চিত।


আরো সংবাদ



premium cement