বাকৃবিতে ট্রেন থামিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৮:৩৬
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সর্বস্তরের ছাত্রসমাজ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রেললাইনে ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী ট্রেন অবরোধ করে রেললাইনে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩ জুলাই) দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হয় বাকৃবির তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কেআর মার্কেট হয়ে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়।
মিছিল চলাকালীন ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, কোটা প্রথার কবর দে’-সহ নানান স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে মুক্তমঞ্চের সামনে একটি প্রতিবাদ সভা করে তারা।
প্রতিবাদ সভা শেষে সেখান থেকে আব্দুল জব্বার মোড় পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি আব্দুল জব্বার মোড়ে পৌঁছালে ওই সময় ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে রেললাইন অবরোধ করে মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। প্রায় এক ঘন্টা রেললাইন অবরোধ রাখার পরে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
আন্দোলন চলাকালীন মেডিসিন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মাশশারাত মালিহা বলেন, ‘২০১৮ সালের ছয় বছর পরে একই কোটা নিয়ে আবার আন্দোলনে নামতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এটিকে কি দেশের উন্নতি বলা যায়? ঘুরে-ফিরে আমরা ছয় বছর পিছিয়েই রইলাম। মুক্তিযোদ্ধা কোটা যদি থাকবেই তাহলে ৭১-এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রাণত্যাগ অর্থহীন হয়ে যায়। আমরা আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রায়ই বলে থাকি যে তাদের তো মুক্তিযোদ্ধা কোটা আছে। চাকরি পেতে তাদের তো মেধার দরকার নেই। এর মাধ্যমে কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকেই প্রতিনিয়ত অবমাননা করা হচ্ছে। আমরা দেশের বীরদের অবশ্যই সম্মান করব। তবে কোনো ধরনের কোটা বৈষম্য আমরা মেনে নেব না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, চাকরিতে নিয়োগ এবং অন্যান্য সকল প্রতিযোগিতার জায়গায় আমরা মেধার শতভাগ মূল্যায়ন চাই।’
একোয়াকালচার বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা আজীবন সর্বোচ্চ সম্মানের যোগ্য। তবে তাদের সম্মান দেয়ার নাম করে কোটা প্রথার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের সাথে ভয়াবহ বৈষম্যের চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলার ছাত্রসমাজ এটি কিছুতেই মেনে নেবে না। ৪ জুলাইয়ে কোটার বিষয়ে যে রায় হবে সেখানে আমরা মেধাবীদের জয় দেখতে চাই। আর তা না হলে দেশের সমগ্র ছাত্রসমাজ একযোগে রুখে দাঁড়াবে।’
গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল-সংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানান রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। পরদিন থেকেই ওই রায়ের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা