০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
ভালুকায় চিরকুট লিখে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা

‘একদিন তো সবাইকে মরতে হবে, আমি না হয় আগেই চলে গেলাম’

ভালুকায় চিরকুট লিখে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা - নয়া দিগন্ত

ময়মনসিংহের ভালুকায় সৌদি প্রবাসী মুহাম্মদ আলীর স্ত্রী শান্তা খাতুন (২২) চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার সকালে (২৮ জুন) উপজেলার ঢাকুরিয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

এ ঘটনায় শান্তার বাবা আইয়ুব আলী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে পাশের কাদিগড় গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে মুহাম্মদ আলীর সাথে ঢাকুরিয়া গ্রামে আইয়ূব আলীর মেয়ে শান্তা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে মুন্নী নামে একটি কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে। দুই বছর আগে মুহাম্মদ আলী স্ত্রীকে নিজবাড়িতে রেখে চাকরি নিয়ে সৌদিআরব চলে যান। এদিকে শান্তার ভাসুর আতাব উদ্দিনের মেয়ে স্কুলপড়ুয়া মীমের সাথে শান্তার চাচাতো ভাই হাসিবুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) স্কুলে যাওয়ার কথা বলে মীম প্রেমিক হাসিবুলের সাথে তার বাড়িতে চলে যান। এ ঘটনার জের ধরে শান্তার ভাসুর আতাব উদ্দিন, অপর ভাসুর আল আমীন ও শাশুড়ি মমতাজ বেগম নানাভাবে শান্তার উপর চাপ প্রয়োগসহ গালমন্দ করেন। দুপুরে শান্তা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে সাথে নিয়ে হাসিবুলদের বাড়িতে যান। মীম তার বাবাসহ পরিবারের অন্যান্যদেরকে জানিয়ে দেয় যে- সে নিজ ইচ্ছায় হাসিবুলের সাথে চলে এসেছে এবং সে হাসিবুলকেই বিয়ে করবে। এ কথা শুনে মীমের পরিবারের লোকজন ওই বাড়ি থেকে চলে আসেন এবং শান্তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। পরে মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে বৃহস্পতিাবর সকালে শান্তা একটি চিরকুট লিখে বসরঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার পর শান্তার পা খাটের সাথে লাগানো ছিল। এতে শান্তার পরিবারের লোকজন দাবি করছে, শান্তাকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার উপর শ্বশুরবাড়ির লোকদের দেয়া এত বড় মিথ্যা অপবাদ সইতে পারলাম না। আমি মীম এবং হাসিবুলের ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত না। আমাকে শুধুশুধু দায়ী করা হয়েছে। এ অপবাদ সইতে না পেরে নিজেই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলাম। আমি মারা যাওয়ার পর আমাকে পাড়াগাঁও (তার বাবা বাড়িতে) কবর দিবেন। আমার মেয়ে মুন্নীকে একটি মাদরাসায় পড়া-লেখা করিয়ে ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবেন। একদিন তো সবাইকে মরতে হবে। আমি না হয় আগেই চলে গেলাম। সবাই ভালো থাকবেন’।

ভালুকা মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ শাহ কামাল আকন্দ জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement