২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মহাসড়কের পাশে ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস শহিদ মিয়ার

শত বছর বয়সেও পাননি জাতীয় পরিচয়পত্র
মহাসড়কের পাশে ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস শহিদ মিয়ার - ছবি : নয়া দিগন্ত

জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত এলাকায় পলিথিন আর কাপড়ের তৈরি একটি ঝুঁপড়ি ঘরে একা একা বসবাস করেন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ শহিদ মিয়া। শহিদ মিয়ার দাবি বয়স তার ১০২ বছর। তবুও পাননি জাতীয় পরিচয়পত্র।

তিনি শেরপুর জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের তারাকান্দা গ্রামের মিরাজ মিয়ার ছেলে। কয়েক বছর আগে তার একমাত্র ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী মারা যায়।

শহিদ মিয়ার ঝুঁপড়ি ঘরটি স্থানীয়দের সহযোগিতা মহাসড়কের পাশে পলিথিন ও কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যেটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ। সামান্য বৃষ্টিতেই চুয়ে চুয়ে পানি পড়ে এই ঘরে। আর নড়বড়ে এই ঘরটি সামান্য ঝড়ে উড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

ঘরটির পেছনে গহিন খাদ আর বিদ্যুতের তার। আর এই ঘরেই একা বসবাস করেন শত বছর বয়সী অসুস্থ্য শহিদ মিয়া। যেকোনো দুর্ঘনায় জীবন হানীর ঘটনাও ঘটতে পারে তার।

শহিদ মিয়া ছিলেন একজন রিকশাচালক। গায়ে তখন শক্তি ছিল তখন রিকশা চালিয়েই জীবিকা চালাতেন তিনি।

তার ছেলে মেয়ে ও স্ত্রী হারিয়ে একা হয়ে পড়েন শহিদ মিয়া। বয়সের ভারে নানা অসুখ-বিসুখে প্রতিবন্ধিত্ব বরণ করেন এই রিকশাচালক ।

স্বজন, ভূমি ও আশ্রায়হীন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ শহিদ এখন নানা রোগে আক্রান্ত। কোথায়ও আশ্রয় না পেয়ে সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছেন জামালপুর-টাঙ্গাইল সড়কের পাশে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত এলাকায়। অসহায় এই বৃদ্ধ একা চলাচল করতে পারেন না।

তার একটি ভাঙা হুইলচেয়ার রয়েছে। যেটি চলাচলের অযোগ্য। শহিদ মিয়ার দাবি তার বয়স ১০৩ বছর। তার অভিযোগ এত বছর বয়স হলেও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) পাননি। যেকারণে সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন বৃদ্ধ।

তিনি বলেন, আমি নড়াচড়া করতে পারি না। হুইলচেয়ার চলানোর শক্তি শরীরের নেই আর।

সিএনজি অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেন বলেন, দীর্ঘ দিন এই সড়কের পাশে পড়ে ছিল লোকটি। আমরা যারা গাড়ি চালাই তারা এবং স্থানীয়রা যা দিত তাই খাইত। পরে প্রায় এক-দেড় বছর ধরে রাস্তার পাশে এই এলাকার লোকজন পলিথিন ও কাপড় দিয়ে এই ঘরটি তোলে দিছে।

স্থানীয় সাদ্দাম মিয়া বলেন, এই লোকটা এহেনে বহু দিন ধইরে আছে। রাস্তার পাশে পইড়ে আছিল। পরে আমরা এলাকার মানুষ মিলে যে যা পাইছে তাই দিয়ে কাপড় পলিথিন দিয়ে এই ঘরডা তুইলে দিছি। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পরে।

স্থানীয় আশরাফ আলী বলেন, ‘দেড় বছরের উপরে হবেন এই মানুষটা এই খানে পইড়ে আছে। পঙ্গু মানুষ চলাফিরা করতে পারে না। গাড়িওয়ালা ও আমরা যেই টুক সহযোগিতা করি ওই টুক দিয়েই বাইচে আছে। কাপড় আর পলিথিনের ঘর বৃষ্টির পানি পরে। আর বাতাসে আইলে ছিরে ছিটে যায়। বড় তোফান আইলে উল্টে যাবে। পিছনে ডালো উল্টে পরলে লোকটি মারাও যেতে পারে। বৃদ্ধ শহিদ এর চাওয়া একটি ব্যাটারিচালিত হুইলচেয়ার আর মাথা গুজার একটু ঠাঁই।’


আরো সংবাদ



premium cement