২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

প্রতিকূল আবহাওয়ায় লিচুর ফলন বিপর্যয়, দিশেহারা লিচু চাষিরা

- ছবি : নয়া দিগন্ত

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মৌসুমি ফল লিচুর ফলন বিপর্যয়ে দিশেহারা জামালপুরের লিচু চাষিরা। অন্যদিকে, আগাম বাগান কিনে বিপাকে পড়ছেন মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীরাও।

লিচু চাষিরা জানায়, চলতি বছর প্রচণ্ড তাপদাহে আর কুয়াশার কারণে লিচুর ফুল ও মুকুল ঝড়ে পড়েছে। ফলে আশানুরূপ ফল আসেনি। এছাড়া লিচুর আকার ছোট হয়েছে। সব মিলিয়ে এ বছর লিচুর বাগান মালিক এবং মৌসুমী লিচু ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন।

লিচু চাষিদের অভিযোগ, এমন বিপর্যয়েও কৃষি অফিসের কোনো সহায়তা পাননি তারা।

তবে, কৃষি অফিস লিচু চাষিদের বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, লিচু চাষিরা যাতে কিছুটা হলেও লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেন, এজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, জামালপুর জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লিচুর চাষ হয়ে থাকে সদর উপজেলায়। এর মধ্যে উপজেলার শরিফপুর, ঘোড়াধাপ, শ্রীরামপুর, রানাগাছা, শাহবাজপুর এলাকার চাষিরা সবচেয়ে বেশি লিচু বাগান করে থাকেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ অঞ্চলের লিচুর চাহিদা বেশি থাকায় চায়না থ্রি, এলাচি, বোম্বায় এবং মুজাফরী জাতের লিচুর চাষ করেন এ অঞ্চলের চাষিরা।

গত কয়েক বছর ধরে লিচুর বাগান করে লাভবান হয়েছেন চাষিরা। যে কারণে দিন দিন লিচু চাষে চাষিদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু চলতি বছর প্রতিকূল আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়ায় লিচুর ফুল ও মুকুল নষ্ট হয়েছে। আর দিনে প্রচণ্ড রোদ আর সকালে কুয়াশার কারণে বাগানে লিচুর ফলন একেবারেই কম হয়েছে। ফলে লিচুর আগাম বাগান কিনে লোকসানের মুখে পড়েছেন মৌসুমী লিচু ব্যবসায়ীরা।

লিচু চাষি আহাম্মদুল্লাহ বলেন, ‘এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় আর প্রচণ্ড তাপদাহে লিচুর বাগান শেষ হয়ে গেছে। সারাদিনের প্রচণ্ড রৌদ্র আর ভোরে কুয়াশায় লিচুর ফুল ও মুকুল নষ্ট হয়ে ঝরে পড়ে গেছে। এছাড়া বাগানে কিছু লিচু থাকলেও সেগুলো আকারে ছোট হয়েছে। এ বছর খরচের টাকাও উঠবে না বলে আশঙ্কা করছেন তার।’

মৌসুমী ফল শফিকুল বলেন, ‘এবার ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার লিচু কিনছিলাম, কিন্তু বৃষ্টি না থাকায় লিচু ফেটে যাচ্ছে। কিটনাশক দিয়েও রক্ষা করতে পাচ্ছি না। যে কারণে লোকসানও গুণতে হচ্ছে।’

এ বছর লিচু চাষে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: এমদাদুল হক বলেন, ‘সারাদেশেই প্রচণ্ড গরম ছিল। কৃষির জন্য আমরা বেশ আতঙ্কগ্রস্ত ছিলাম। তার মধ্যে ফলের ব্যাপারে আমাদের বিশেষ চিন্তা ভাবনা ছিল। জামালপুরের লিচু সারাদেশেই নাম ডাক আছে।’

তিনি আরো বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে লিচু চাষিদের নানা পরামর্শ দিয়েছি।

জামালপুর সদর উপজেলা কৃষি সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জামালপুরে ১৬০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি।


আরো সংবাদ



premium cement