২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জামালপুরে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র চরে মরিচের ভালো ফলন

জামালপুরে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র চরে মরিচের ভালো ফলন হয়েছে - ছবি : নয়া দিগন্ত

যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীবিধৌত জামালপুর পলি মাটি যেন সোনা ফলায়। মরিচ যেন তেমনি এক সোনার ফসল। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া এবং গত বন্যায় জমিতে প্রচুর পরিমাণ পলি মাটি পড়ায় এ বছর জামালপুরের যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। মরিচের দামও ভালো থাকায় কৃষকদের মুখে দেখা গেছে হাঁসির ঝিলিক। জেলার পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বয়ে চলছে যমুনা এবং পূর্ব পাশ দিয়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বয়ে চলেছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ। দুই নদ-নদীর পাড়ের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলগুলো যেন সোনা ফলানোর এক কারখানা।

চোখ মেলে তাকালেই বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল জুড়ে চোখে পড়ে মরিচ, ভুট্টা ও গমসহ নানা ফসলের সমারোহ। চরাঞ্চলের মাটি যে এতো খাঁটি সোনা তা নিজ চোখে না দেখলে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। এ বছর অনূকূল আবহাওয়া ও পলি মাটি মরিচ চাষের উপযোগী হওয়ায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে জেলার সাত উপজেলায় ৩৬০০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।

সরেজমিনে জামালপুরের কৃষক পণ্যের ঐতিহ্যবাহী গুঠাইল হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘এখনো শুকনো মরিচ পুরোপুরি নামেনি (আমদানি) হয়নি। তবুও বর্তমানে প্রতি মণ মরিচ ৯ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

এ সময় কথা হয় যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল সাপধরী ইউনিয়নের কালির চর গ্রামের কৃষক আব্দুল হাইয়ের সাথে। তিনি বলেন, ‘এবার মইচ (মরিচ) ভালাই ফলন হইছে। দরদামও আল্লার রহম ভালাই। এই বছর মরিচে নাভ (লাভ) ভালাই অবো।’

কাঁসারি ডোবা গ্রামের খলিলুর রহমান বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ মরিচ হয়। প্রতি মণ ১০ হাজার টাকা করে হলেও এক লাখ ২০ হাজার টাকা হয়। মরিচ উঠার পর ওই জমিতে পাট বোনা হবে।’

কৃষক আনছার আলী বলেন, ‘মরিচ যখন লালে লাল হয় তখন সোনার মতো দামি হয়। আর আমরা সোনা ঘরে তুলে সোনালী আঁশ বুনমু।’

ইসলামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার এ এল এম রেজুয়ান বলেন, ‘যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলের মাটি মরিচ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচে মরিচ একটি লাভজনক ফসল। চরাঞ্চলের মাটিতে বৃষ্টি হলে পানি আটকে না থাকায় এবং বেলে-দোআঁশ মাটি মরিচ চাষের জন্য অত্যান্ত উপযোগী। তাই মরিচ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।’


আরো সংবাদ



premium cement