জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসকের ওপর হামলা
- খাদেমুল বাবুল, জামালপুর
- ১২ মার্চ ২০২৪, ১৯:২১
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনদের হামলায় আহত হয়েছে তিনজন ইনটার্ন চিকিৎসক। এছাড়াও পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের একটি কক্ষ ভাংচুর করেছে বিক্ষুব্ধ রোগীর স্বজনেরা।
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, রাত ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে পৌর শহরের রশিদপুর এলাকার গুল মাহমুদ নামে একজন রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তির জন্য পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রেরণ করা হয়। ওই সময় পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে একজন রোগীকে সেবা দিচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর সেই চিকিৎসকরা পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ফিরে এসে রোগী গুল মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই গুল মাহমুদের স্বজনেরা তাদের ওপর হামলা চালায় এবং একটি কক্ষ ভাংচুর করে।
পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে যখন রোগীটি আসে তখন সেহেরি খেতে গিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। রোগীর ছেলেরা অনেক চিৎকার করার পরেও কোনো ডাক্তার না এলে পুরুষ মেডিসিনি ওয়ার্ডের ডিউটি ডাক্তারের রুম লাথি দিয়ে খুলে ভাংচুর করে। এর আগে, রোগীকে তার ছেলেরা পানি খাওয়ানোর পরই মারা যায়। এতে আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে রোগীর স্বজনরা। এরপরে ডাক্তার এলে ডাক্তারকে মারধর করে মৃত গুল মাহমুদের রোগীর দুই ছেলে।
হামলায় আহত ইনটার্ন চিকিৎসকরা হলেন, ডা: মঞ্জুরুল হাসান জীবন, ডা: ফাহমিদুল ইসলাম ফাহাদ এবং ডা: তুষার আহমেদ। হামলার পর থেকে দুই দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্ম বিরতির ডাক দিয়েছেন ইনটার্ন চিকিৎসকরা।
ইনটার্ন চিকিৎসক ডা: এম এ কাবী সিকান্দর আলম বলেন, সারাদেশে সকল হাসপাতালে চিকিৎসকের নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তা ফাঁড়ি স্থাপন এবং এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আমরা কর্মবিরতি করছি। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় পর্যন্ত আমাদের এই কর্মবিরতি চলবে। শুধু শুধু চিকিৎসকদের ওপর হামলা করবে এটা কখনো মেনে নেয়া যায় না।
এ ঘটনায় জামালপুর থানায় অভিযোগ দেয়ার পাশাপাশি রোগীদের দূর্ভোগ কমাতে কর্মবিরতি তুলে নেয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর দুপুরে গুল মাহমুদের লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তরের পর পুলিশ জানায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তারা।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ঘটনার পরে আমরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর কর্ম বিরতির জন্য যদি কোনো দুর্ভোগ হয়। তাহলে আমি চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে কর্মবিরতি তুলে নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যাতে রোগীদের কোনো দুর্ভোগ না হয়।
জামালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দু’পক্ষের সাথে কথা বলেছে । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোগীর ছেলে হায়দারকে আটক করি এবং এরপর তাকে আমরা স্থানীয় কাউন্সিলরের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি।
মুহাম্মদ মহব্বত কবির আরো বলেন,‘দুপুরে আমরা গুল মাহমুদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা