ঈশ্বরগঞ্জে দেনার টাকা পরিশোধের পরও দিনমজুরকে পেটাল সুদ কারবারি
আটক ১- ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা
- ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৬
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দেনার টাকা সুদসহ আদায়ের পরও অতিরিক্ত টাকা দাবি করে তা আদায় করতে দিনমজুরকে আটকে রেখে বেধড়ক পেটালেন স্থানীয় এক সুদ কারবারি।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের সুটিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আসলসহ সুদের টাকা পরিশোধ করার পরও সুদের কারবারি মো: নুরু মিয়া আরো অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন দিনমজুর আব্দুস সাত্তারের (৪০) কাছে। উপায় না পেয়ে ১৫ দিন আগে নুরু মিয়াকে বাড়িতে এনে পা ধরে ক্ষমা চান সাত্তার। এতেও মন গলেনি নুরু মিয়ার।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিনমজুর সাত্তার স্থানীয় সুটিয়া বাজারে চা খেতে এলে নুরু মিয়া তার বাজারের ঘরে সাত্তারকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তার ছেলে আনিস মিয়াকে সাথে নিয়ে সাত্তারকে অবরুদ্ধ করে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন এসে পিটুনিতে বাঁধা দিলে তাদেরকেও মারধর করে নূরু মিয়া ও তার ছেলে।
এ সময় সাত্তারের ডাক চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন সাত্তারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নূরু মিয়ার ছেলে মো: আনিস মিয়াকে আটক করে। পালিয়ে যায় নূরু মিয়া। ওই ঘটাকে কেন্দ্র করে আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী মোসা: পারভীন আক্তার নুরু মিয়াকে প্রধান আসামি করে তিন জনের নামে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। নুরু ওই ইউনিয়নের সুটিয়া বাশাটি গ্রামের মরহুম দানেশ মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়,গত ছয় মাস আগে সুদারু (সুদের কারবারি) নুরু মিয়ার কাছ থেকে দিনমজুর সাত্তার সংসারের কাজের জন্য সুদ হিসেবে ৯০ হাজার টাকা নেন। ৯০ হাজারে সুদ হিসেবে জোড় পূর্বক দৈনিক ৯০০ টাকা লাভ নিতেন নুরু মিয়া।
এভাবে আসল ৯০ হাজার ও সুদে হিসেবে এক লাখ ৬২ হাজার টাকাসহ সর্বমোট দুই লাখ ৫২ হাজার টাকা আদায় করে নুরু মিয়া। তারপরও সাত্তারের কাছে আরো সুদের টাকা দাবি করলে দিনমজুর নিরুপায় হয়ে পা ধরে ক্ষমা চান। এতে সুদ কারবারি নুরু মিয়া ক্ষমার বদলে আরো ক্ষিপ্ত হন। পরে সাত্তারকে ডেকে এনে অবরুদ্ধ করে বেদম মারপিট করেন।
ভুক্তভোগী আব্দস সাত্তার বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। দিন আইন্যা দিন খাই। অভাবের তাগিদে সুদে টাকা আইন্যা লাভসহ পরিশোধ করার পরো আমাকে আরো টাকা দিতে বলে। কিন্তু আমার সামর্থ্য না থাকায় আমি চাচার পাও ধরে মাফ চাইলেও ক্ষমা করেনি। আমাকে বাঁশের লাডি দিয়া বাইড়াইয়্যা (পিটিয়ে) ও এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মাইরা আমাকে শেষ করে দিছে। আমি এতিম, আমার কেউ নাই। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুদের কারবারি মো: নুরু মিয়া পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আহত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছে। আটক আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা