ধর্মমন্ত্রী ও তার বাবাকে ‘রাজাকার’ বললেন যুবলীগ নেতা
- জামালপুর প্রতিনিধি
- ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:১৩
জামালপুর-২ আসনের এমপি ধর্মমন্ত্রী মো: ফরিদুল হক খান দুলাল এবং তার পিতা হবিবর রহমান খানকে এক ফেসবুক পোস্টে রাজাকার বলেছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ-সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মীর শরিফ হাসান লেলিন।
গত রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ধর্মমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর ছবিসহ ওই পোস্ট করেন মীর শরীফ হাসান লেলিন। এ সময় তিনি চট্টগ্রাম থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত দিলোয়ারা ইউসুফকেও ‘রাজাকার’ অভিহিত করেন।
যুবলীগ নেতা মীর শরিফ হাসান লেলিন বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন এবং তার মা একাদশ সংসদের জামালপুর নারী আসনের সাবেক এমপি হোসেন আরা।
লেলিন ফেসবুক পোস্টে এমন মন্তব্য করায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, লেলিন অনেক আগে থেকেই মো: ফরিদুল হক খান (দুলাল) এমপিসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে নানাবিধ অশালীন মন্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে অপপ্রচার করে যাচ্ছেন।
তবে লেলিনের দাবি, তিনি কখনোই কারো বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য ফেসবুকে ছড়াননি। যেটা সত্য, তিনি সেটাই প্রকাশ করেন।
তার দাবি, ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি করা আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাশেদ মোশাররফকে পরাজিত করেছিলেন ফরিদুল হক। মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত চেয়ারম্যান হত্যা মামলার এক নম্বর আসামিও তিনি।
এ বিষয়ে লেলিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফেসবুক মেসেঞ্জারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভাই, আপনারা তো সত্য লিখবেন না। সাহস থাকলে এবার লেখেন। ধর্মমন্ত্রীসহ তার পরিবারকে নিয়ে আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি। পোস্টের সবগুলো তথ্যই সঠিক। আমি কারো বিরুদ্ধে কোনো অপবাদ ছড়াচ্ছি না। বরং যেটা সত্য, সেটাই পোস্ট করেছি। এটা দোষের কিছু আছে বলে মনে করি না। কারণ, সত্য উন্মোচন করা দরকার। সে কারণেই ফেসবুকে পোস্ট করেছি।’
ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারী বলেন, ‘ধর্মমন্ত্রী ও তার বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেয়ায় আমরা হতবাক হয়েছি। ধর্মমন্ত্রী একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তিনি একবার উপজেলার চেয়ারম্যান এবং টানা চারবারের এমপি। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ রকম জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিকে নিয়ে ফেসবুকে অপবাদ ছড়ানো প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়। আমি বিষয়টির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম বলেন, ‘ধর্মমন্ত্রী ও তার পরিবারকে নিয়ে লেলিনের এমন পোস্ট এটাই প্রথম নয়। এটি নিন্দনীয় কাজ। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পোস্টের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান মোবাইল ফোনে দৈনিক নয়াদিগন্তকে জানান, ‘আমাকেসহ আমার পরিবারকে নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেলিন ফেসবুকে অশালীন মন্তব্য পোস্ট করার বিষয়টি জেনেছি। মাঝেমধ্যেই সে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ায়। এটা তার অভ্যাস। আমি ধৈর্য ধরেছি। এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই আমার।’
বিষয়টি নিয়ে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ লেলিনের মা জামালপুর সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি হোসনে আরা। তিনি বলেন, ‘ছেলে লেলিনের ফেসবুকে পোস্ট আমার নজরে পড়েছে। এটা ঠিক হয়নি। ধর্মমন্ত্রীকে ঘিরে সম্মানহানিকর মন্তব্য কিংবা অবমাননাকর লেখা ফেসবুকে পোস্ট করা উচিত হয়নি। তাছাড়া, ধর্মমন্ত্রী আর আমরা একই দলের রাজনীতি করি এবং একই এলাকার বাসিন্দা। ধর্মমন্ত্রী দুলাল আমার বড় ভাই। তাকে অসম্মান করাটা আমাদের কাম্য হতে পারে না।’
ছেলে লেলিনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, ‘একমাত্র মায়ের অবাধ্য সন্তানেরাই এমন নিন্দনীয় কাজ করতে পারে। এটি কখনো কাম্য হতে পারে না।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা