জামালপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের গুরুত্বপূর্ণ বংশ খাল এখর ময়লার ডাস্টবিন
- জামালপুর প্রতিনিধি
- ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩৪
জামালপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ঐতিহাসিক বংশ খাল। কিন্তু শহরের পানি নিষ্কাশনের গুরুত্বপূর্ণ এই খালটি ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। শহরের সিংহজানী সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে শুরু হয়ে সকাল বাজার কালি ঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটিতে এখন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলায় বিশাল একটি ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া গৃহস্থালী বর্জ্য, ক্ষতিকর ও দূষিত মেডিক্যাল বর্জ্য ফেলা হয় গুরুত্বপূর্ণ খালে। ফলে শহরের পানি নিষ্কাশনের পরিবর্তে ময়লার স্তুপের পরিনত হয়েছে ঐতিহাসিক বংশ খাল।
কোনো অতীতে উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গে ব্যবসায়ী/বনিকরা ব্রহ্মপুত্র নদের নৌ পথে চলাচলের সময় বনাঞ্চালে ভেতর দিয়ে বয়ে চলা বংশ নদীর ধারে বজ্রা/নৌকা নোঙ্গর করে বিশ্রাম করতেন। বংশ নদীর তীরে বিশ্রামের এই স্থানটিতে একসময় গঞ্জ হিসেবে গড়ে উঠে। কালের পরিক্রমায় গঞ্জের হাট নামে পরিচিতি এলাকটিকে ঘিরে গড়ে উঠে জামালপুর শহর।
মানব সৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতা ও দখলদারীত্বের রুশানলে পড়ে এককালের ঐতিহাসিক বংশ নদী এখন নর্দমা যুক্ত বংশ খালে পরিণত হয়েছে।
এলাকাবাসী পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বংশ খালের পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ নজর দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ নেকনজর দিলে এলাকায় মশার উপদ্রপ এবং পরিবেশের দূষণের কবল থেকে রক্ষা পেতো জামালপুর শহরের একটি বড় অংশ ।
স্থানীয় আব্দুল বাসেদ নাম এক শহরবাসী বলেন, মুকন্দবাড়ি ডাইলের মিল হতে নকিব উদ্দিন হাসপাতালের পেছন দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে মিলিত হয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই খালটি।
প্রতিদিন এই খালের নিক্ষিপ্ত মূলমুত্র, বর্জ্য এবং দূষিত পদার্থ স্রোতবিহীন ব্রহ্মপুত্র নদ পড়ে নদের পরিবেশও বিষাক্ত করে তুলছে।
যে কারণে দেশী জাতের মাছ থেকে শুরু করে ধ্বংস হচ্ছে নদের জ্বলজ প্রাণি। পৌরসভার কঠোর পদক্ষেপ এবং জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচি রক্ষা করতে পারে ঐতিহ্যবাহী বংশ খাল, জামালপুর শহর ও ব্রহ্মপুত্র নদের পরিবেশ।
জানা যায়, জামালপুর-৫ (সদর) আসনের এমপি আবুল কালাম আজাদ ব্রহ্মপুত্র নদকে পরিষ্কার-পরিচন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
জামালপুর অনলাইন জারর্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি মানবাধিকার এবং পরিবেশ কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের আগে বংশ খালটি পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, বংশ খালের ওপর স্লাব বসালে হাল্কা যানবাহন চলতে পারতো। এতে শহরের যানজট কিছুটা হলেও হ্রাস পেতো।
এ ব্যাপারে জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু জানান, বংশ খালে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে অতি শিগগিরই মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে খালটি পরিস্কার অভিযান পরিচালনা করা হবে। খালের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে জনসচেতনতা সৃষ্টি লক্ষ্যে কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া খালের ওপর স্লাব বসানোর বিষয়টিও পৌর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা