জামালপুরে ৩ ফসলি জমিতে নকশিপল্লী না করার দাবিতে মানববন্ধন
- জামালপুর সংবাদদাতা
- ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৬
জামালপুরে নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা নকশিপল্লী প্রকল্পের জন্য তিন ফসলি কৃষি ভূমি অধিগ্রহণ না করার দাবিতে কৃষকদের বাঁচানোর আকুল আবেদন জানিয়ে ভূমির মালিকরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এছাড়া কৃষক-কৃষাণীরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কৃষক মো: জাহাঙ্গীর আলম, সিরাজুল হক মাস্টার, মো: মুরাদুজ্জামান ও মো: মিন্টু মিয়া।
বক্তারা বলেন, সরকারি আদেশে জামালপুর জেলা প্রশাসন সদর উপজেলার অন্তর্গত জামালপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দ্রা ও চরচন্দ্রা মৌজা এবং মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের চরবানিপাকুরিয়া ও চরপলিশা মৌজায় কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করে ‘শেখ হাসিনা নকশীপল্লী, জামালপুর (১ম পর্যায়)’ নামে একটি বৃহৎ প্রকল্প নির্মাণের কার্যক্রম চলছে।
এই প্রকল্পের জন্য দু’টি উপজেলার চারটি মৌজায় ৩০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে বিগত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে প্রকল্পটির জমি অধিগ্রহণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে দুই দফা নোটিশ পাঠানো হয়েছে ভূমির মালিক/কৃষকদের কাছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই তিন ফসিল কৃষি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কায় হাজার হাজার কৃষক। এতে কৃষকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষকরা জানান, জমি অধিগ্রহণ না করার জন্য জামালপুরের জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে বার বার অনুরোধ করার পরও প্রশাসন থেকে দুই দফা ভূমি অধিগ্রহণের নোটিশ পেয়েছে তারা। যে কারণে চরম হতাশ এ অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক পরিবার।
বক্তারা আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিন ফসলি কৃষি জমিতে কোনো শিল্প-কলকারখানা স্থাপন না করার জন্য আপনার সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও একটি মহল জামালপুর সদর উপজেলা ও মেলান্দহ উপজেলার চারটি মৌজার কৃষকদের কৃষি জমি অধিগ্রহণ করে সেখানেই নকশিপল্লী নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। ঝিনাই নদীর পশ্চিমপাড়ে উর্বর চরাঞ্চলের এসব জমিতে এসব কৃষি কখনোই অনাবাদি থাকে না।
এখানে আমন ধান, ইরি-বোরো ধান, পাট, মরিচ, সরিষা, কপি, আলু, মিষ্টি আলু, টমেটা, মুলা, গাঁজর, বেগুন, লাউসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি আবাদ হয়ে থাকে। এসব ফসল ও সবজি চাষ করে নিজেদের খাদ্যচাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রি করে কৃষকরা অর্থউপার্জনের মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ করে আসছেন বংশ পরম্পরায়। তিনফসলি এই সব জমি কৃষকের প্রাণ। চারটি মৌজার আওতায় বিস্তীর্ণ এই এলাকা জুড়ে ফসল ফলানোর জন্য কৃষকদের ২৮৫টি অগভীর নলকূপের পানিসেচ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কৃষকরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনা নকশীপল্লী জামালপুর’ নামের প্রকল্পটি আমাদের তিন ফসলি জমিতে করা হলে দুই উপজেলার হাজার হাজার কৃষক তাদের কৃষি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে। এতে প্রতিটি পরিবারের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অধিগ্রহণের আওতায় আনার জন্য নোটিশকৃত ওই ৩০০ একর ভূমি (তিন ফসলি কৃষি জমি) কমে যাবে। হাজার হাজার কৃষক পরিবারের মুখের খাবার কেড়ে না নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন কৃষকরা।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন তারা। এবং একটি অনুলিপি ভূমিমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রণালয়ের সচিব, জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য, সদর উপজেলা ও মেলান্দহ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরও পাঠানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা