ভালুকায় ভূঁইয়া পেপার মিলে আবারো কিশোর শ্রমিকের মৃত্যু
- আসাদুজ্জামান, ভালুকা (ময়মনসিংহ)
- ১১ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১৭
ময়মনসিংহের ভালুকায় ভূঁইয়া পেপার মিলের মেশিনে পিষ্ট হয়ে মেহেদী হাসান (১৫) নামের এক কিশোর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ভোর রাতে উপজেলার ছোট কাঁশর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। ফ্যাক্টরির অব্যবস্থাপণার কারণে একইভাবে মেশিনে পিষ্ট হয়ে এর আগেও মাসুদ রানা (২৪) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের কিশোর ছেলে স্থানীয় নবদিগন্ত হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান (১৫) চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ভূঁইয়া পেপার মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগদান করেন। রোববার প্রতিদিনের মতো নাইট শিফটে কাজ শুরু করেন। রাতের কোনো এক সময় তিনি হাইকন পালপাড় ও কনবেয়ার বেল্ট মেশিনের সাথে পিষ্ট হয়ে মারা যান। সোমবার সকালে সহকর্মীরা মেহেদীর লাশ দেখতে পেয়ে মিল কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। পরে থানায় বিষয়টি জানানো হলে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
মেহেদীর মা হামিদা খাতুন বলেন, ‘তার ছেলে ১০ পারা কুরআনের হাফেজ। এ বছর তিনি অষ্টম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে পাড়াগাঁও নবদিগন্ত স্কুল থেকে নতুন বই নিয়েছে। তার বাবা নেই, পড়া লেখার টাকা যোগাতেই তিন দিন আগে এই ফ্যাক্টরিতে চাকরি নিয়েছে।’
এ সময় ফ্যাক্টরির বাইরে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন জানান, কারখানাটি লাউতি খাল দখল করে গড়ে উঠেছে। ইটিপি প্লান ব্যবহার না করেই শিশু শ্রমিকদের দিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কারখানার ময়লা কাগজ প্রকাশ্যে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে এলাকার পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। শিল্প আইনের কোনো রকম তোয়াক্কা করছে না ফ্যাক্টরিটি। গত ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর রাতে ফ্যাক্টরির অব্যবস্থাপণার কারণে মেশিনে পিষ্ট হয়ে মাসুদ রানা নামে আরো এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
ভূঁইয়া পেপার মিলের অ্যাডমিন ম্যানেজার আব্দুর রহিম বলেন, ভোরের দিকে পেপার কাটিং নেয়ার সময় নিহত মেহেদীর লাশ দেখতে পেয়ে ভালুকা মডেল থানাসহ ফ্যাক্টরির ঊর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। পরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন কারখানায় আসেন।
এ সময় কিশোর শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান থেকে নেয়া জন্ম নিবন্ধন দেখে শ্রমিকদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, পরিবার থেকে অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাশের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা