১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ শাবান ১৪৪৬
`

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভালুকায় নিহত তোফাজ্জল হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী নিখোঁজ

- ছবি : প্রতীকী

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ময়মনসিংহের ভালুকায় নিহত তোফাজ্জল হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী মামুন (১৮) গত রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় তার বড় ভাই মো: ইসলাম উদ্দিন সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভালুকা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

নিখোঁজ মামুনের বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন জানান, মামুন তার কর্মস্থল উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় অবস্থিত নোমান কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডে ডিউটি শেষে রোববার রাত ১০টার দিকে বের হন। রাত ১১টা পর্যন্ত সে বাড়ি না ফেরায় তারা বিভিন্ন স্থানে খোজাখুঁজি করতে শুরু করেন। সবশেষ থানায় এসে সাধারণ ডায়েরি করেন।

মামুন নেত্রকোণা জেলার দূর্গাপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মগবুল হোসেনের ছেলে। তিনি নিজ এলাকার কাপাসিয়া স্কুলে কারিগরি শাখায় ১০ম শ্রেণিতে পড়তেন। স্কুলজীবন থেকেই মামুন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। পাশাপশি তিনি গাওকান্দি ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। এলাকায় পুলিশি হয়রানীর কারণে ভালুকা এলাকায় রোমান কম্পোজিট মিলে চাকুরি নেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে মামুন জামিরদিয়া এলাকায় সমন্বয়ক হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সারাদেশ যখন উত্তাল সেই দিন মামুন তার সহকর্মীকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করতে রাস্তায় নেমে আসেন। মিছিলে এসে পরিচয় হয় তোফাজ্জলের সাথে। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় গাজীপুরের জৈনাবাজার এলাকা থেকে হাজার হাজার ছাত্র, জনতা ও শ্রমিকরা ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক হয়ে ময়মনসিংহের দিকে আসার পথে ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া ঢুকে পড়লে ভালুকা এলাকা আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিকলীগসহ অংগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতা কর্মীরা বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতি গ্রামের মরহুম আব্দুর রশিদের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন গুরুতর আহত হন। আহত তোফাজ্জলকে মামুন উদ্ধার করে প্রথমে জামিরদিয়া পপুলার হাসপাতালে পরে জৈনাবাজার এলাকায় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তোফাজ্জলের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসা দিতে অনিহা প্রকাশ করেন।

তোফাজ্জলকে বাঁচানো জন্য শেষ পর্যন্ত গাজীপুরের শ্রীপুরের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার পূর্বেই তোফাজ্জাল মারা গেছেন। এ সব ঘটনার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী ছিলেন সমন্বয়ক মামুন। তোফাজ্জল নিহত হওয়ার পরও অদ্যাবধি কোনো মামলা হয়নি। তোফাজ্জল হত্যা ঘটনায় কোনো মামলা না হওয়ায় বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে মামুন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তার পরিবারের দাবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্বাক্ষাৎকার দেয়ার কারণেই মামুন হয়তো নিখোঁজ হতে পারেন।


আরো সংবাদ



premium cement