গৌরীপুরে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকার নতুন সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ
নির্মাণের ৪৮ ঘণ্টা না যেতেই উঠে যাচ্ছে সুরকি-পাথর- সাজ্জাতুল ইসলাম গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
- ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:০১
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের বৃবড়ভাগ থেকে বাংলাবাজার নতুন সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের বিটুমিন, সুরকি, পাথর ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও রাস্তার দু’পাশে মাটি ভরাট ও পুকুর-খালের পাড়ে গাইডল নির্মাণ ছাড়াই ঝুঁকিপূর্ণভাবে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। রাস্তার কার্পেটিং করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই উঠে যাচ্ছে সুরকি-পাথর।
গ্রামবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) নির্মাণাধীন সড়কে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্নস্থানে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। রাস্তার দু’পাশে সড়ক নির্মাণে নতুনভাবে কোনো মাটি ভরাট করা হয়নি। খালপাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হলেও দেয়া হয়নি গাইডল। এতে সড়কটি বর্ষা মৌসুমে ধসে পড়ার শংকা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আড়াই কিলোমিটার রাস্তাটি নির্মাণে প্রায় ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে তৎকালীন এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এ সড়কের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। রাস্তাটি নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের খোয়া (ইট-সুরকি) ব্যবহার করা হয়েছে। বালির বদলে রাস্তায় দেয়া হয়েছে মাটি।
বৃবড়ভাগ গ্রামের মরহুম আলী নেওয়াজের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবুল জানান, রাস্তার কার্পেটিং করার সময় পিচ (বিটুমিন) অত্যন্ত নিম্নমানের ও কম ব্যবহার করা হয়েছে। যেকারণে পাথর খসে যাচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের পরেই বিভিন্ন স্থানে ক্ষত দেখা দিয়েছে।
একই গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন বাচ্চু মিয়া (৬৫) জানান, রাস্তা করে গেল বৃহস্পতিবার। আজকে খালি পায়ে ঘষা দিলে সুরকি উঠে যাচ্ছে। বিটুমিন না দিয়ে সম্ভবত কালো রং ব্যবহার করা হয়েছে।
মফিজুর রহমানের ছেলে বুরহামন মণ্ডল বলেন, অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের বিটুমিন ও সুরকি, তাই কাজ শেষ ,রাস্তার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে।
ঠিকাদার সাব্বির আহমেদ বলেন, রাস্তা নির্মাণের জন্য সরকারের নির্ধারিত মানের বিটুমিন ও পর্যাপ্ত পাথর দেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা কাজ করেছে। কোথাও ত্রুটি হওয়ার কথা নয়, এরপরেও কোনো সমস্যা হয়ে থাকলে তা মেরামত করে দেয়া হবে।
সড়কটির নির্মাণের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন গৌরীপুর প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী এনামুল হক। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কার্পেটিং ওঠে যাওয়ার বিষয়টি সরজমিনে দেখে তারপর বলতে পারব, কী কারণে হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী অসিত বরণ দেব বলেন, মাত্র সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বিটুমিন আর পাথর একসাথে জমাট বাধতে একটু সময় লাগে। দু’একদিন গেলে রাস্তাটা ঠিক হয়ে যাবে। মাত্র কাজ শেষ হয়ে সেজন্য হয়তো এমন হয়েছে।