ভুলে বাদ পড়া ৩ শিক্ষার্থীকে ভর্তি নিলো বাকৃবি
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:৪৪
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না করেও ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিন শিক্ষার্থী। নিজেদের ভুলে ভর্তির কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা না দিয়ে বাসায় চলে যান বাকৃবিতে ভর্তির সুযোগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষার্থীরা। পরে বিষয়টি বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মো: শফিকুল ইসলামের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালে কিছুদিন সময় নেয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া এ বিষয়টি নিশ্চত করেন।
এর আগে সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে ভিসির কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সভায় মানবিক দিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ওই তিন শিক্ষার্থীকে ভর্তি হয়ে ক্লাস করার অনুমতি দেয়।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী তিন শিক্ষার্থীর নাম মোছা: শিলা আক্তার শম্পা, রুবায়েত শারমিন আফিফা ও নওশীন তাসনিম শশী। তারা ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বাকৃবিতে ভর্তির সুযোগ পান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোছা: শিলা আক্তার শম্পা বলেন, ‘আমি গত ৯ ডিসেম্বর বাকৃবিতে ভর্তির জন্য এসেছিলাম। আসার পর ভর্তি কার্যক্রমের মেডিক্যাল চেকআপ, হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর, ডিন স্যারের স্বাক্ষর নিয়েছিলাম। সবকিছু সম্পন্ন করার পর ডিন অফিস থেকে আমার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে আমাকে পাঠিয়ে দেয়। পরে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর না নিয়ে এবং কাগজপত্র জমা না দিয়েই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে বাসায় চলে আসি। আমার উচিত ছিল কাগজপত্র জমা দিয়ে পরে ব্যাংক একাউন্ট খোলা। কিন্তু ব্যাংক একাউন্ট খোলার পরে আমাকে একজন বলেছিল, তোমার কাজ শেষ চলে যাও। তাই চলে এসেছিলাম।’
শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরবর্তীতে ওয়েবসাইটে মাইগ্রেশনে সবার বিষয় পরিবর্তন হয় কিন্তু আমার হয় না। আমি মনে করি, হয়তো কারিগরি ভুল। তাই কৃষি গুচ্ছের নিয়ন্ত্রণকারী হেল্পলাইনে মেইল করি। তারা দু’দিন পরে আমাকে মেইলের উত্তরে জানান, আমি অনুপস্থিত। তারপর আমি বাকৃবিতে এসে প্রথমে প্রক্টর অফিসে যাই, ওখান থেকে রেজিস্ট্রার অফিসে পাঠায়। সেখানে কথা বললে উনারা জানায় ভর্তি শেষ হয়ে গেছে এখন আর কিছু করার নেই। আমি ওখান থেকে ডিন অফিসে আসি। পরে ডিন অফিসে আমাদের ফ্যাকাল্টির হুমাইদা ভাই, সাদাত ভাইয়াসহ কয়েকজন বসে ছিল। আমরা চলে যাব এমন সময় তারা বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের নিয়ে রেজিস্ট্রার অফিসে যান, সেখানে উনারা কথা বলেন। তারপর তারা ভিসির সাথে দেখা করালে তিনি বলেন, বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ২৯ ডিসেম্বর আবার আসি, আসার পরে ওখানে একটা সভা ডাকা হয়েছিল। তখন বাকৃবি ছাত্রদলের সদস্যসচিব শফিক ভাই অনেক সাহায্য করেন। তিনি আমাকে নিয়ে ভিসির সাথে কথা বলেন। কৃষি গুচ্ছ নিয়ন্ত্রণকারী চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ভিসির সাথে যোগাযোগ করে আমাকে সাহায্য করেন। পরে ভিসি আমার ফর্মের ছবি তুলে সিভাসু ভিসির কাছে পাঠিয়ে দেন। পরে মানবিক বিবেচনায় আমাকে ভর্তির সুযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেহেতু আমি সেকেন্ড টাইমার ছিলাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি ক্যান্সেল করে আসছি। এখানে ভর্তি বাতিল হলে আমার পড়াশোনার সুযোগই থাকত না।’
এ বিষয়ে বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিনজন শিক্ষার্থীর মধ্যে দু’জন শিক্ষার্থী সেকেন্ড টাইমার এবং অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি বাতিল করে এসেছে। যখন জানলাম অল্প ভুলের জন্য তাদের ক্যারিয়ারটা নষ্ট হতে চলেছে। তখন আমি চিন্তা করলাম, তাহলে কি করা যায়। পরের দিন ভিসির কাছে গিয়ে অনুরোধ করলাম। তাদের অভিভাবকরাও আরো বিভিন্ন জায়গা থেকে চেষ্টা করেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজটি সফলতার মুখ দেখেছে।’
এ বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীরা ৭৫ শতাংশ ভর্তি প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ করেছিল। কিন্তু নিজেদের একটু বোঝার ভুলের কারণে পরিপূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। ফলে তাদের ভর্তি বাতিল হয়ে যায়। যেহেতু তারা মেরিটে নিজের যোগ্যতা দিয়েই চান্স পেয়েছিল তাই আমরা চিন্তা করলাম শিক্ষার্থীদের একটু বোঝার ভুলের কারণে নিজেদের জীবন শেষ হয়ে যাবে। এজন্য আমরা ভর্তি কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী বিশ্ববিদ্যালয় সিভাসুর ভিসির সাথে যোগাযোগ করি এবং আমাদের এডহক মিটিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিই। তারা যেহেতু মেরিটে চান্স পেয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সুযোগ পেয়েছিল এবং একটু বোঝার ভুলের কারণে তাদের জীবন শেষ হয়ে যাবে তাই তাদেরকে বিশেষ বিবেচনায় ভর্তি ও ক্লাসের সুযোগ দিয়েছি।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা