অননুমোদিত হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনে মা ও নবজাতকের মৃত্যু
- সরিষাবাড়ি (জামালপুর) সংবাদদাতা
- ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:১২
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অননুমোদিত মাতৃছায়া হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনকালে নবজাতক ও মা আল্পনা আক্তারের (২২) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে তড়িঘড়ি করে মা ও নবজাতকের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
আল্পনা আক্তার সরিষাবাড়ী পৌরসভার মূলবাড়ি গ্রামের উজ্জল মণ্ডলের স্ত্রী।
জানা যায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরিমানা হিসেবে ব্যাংকের একটি চেক ওই নারীর স্বামীর হাতে ধরিয়ে দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে সিজারিয়ান অপারেশন করা গাইনি সার্জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আল্পনা আক্তারের শ্বশুর আব্দুল মান্নান মণ্ডল জানান, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রসবব্যথা উঠলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডের মাতৃছায়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
সূত্র জানায়, ‘কম খরচে সিজার করিয়ে দেয়ার প্রলোভনে শাবনুর নামে এক দালাল রোগীকে তার স্বামীর সাথে মাতৃছায়া হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একজন গাইনি সার্জন এনে কোনো প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ছাড়াই একই ব্যক্তি অজ্ঞান এবং অপারেশন সম্পন্ন করেন। অপারেশনকালে নবজাতকের মৃত্যু হয়। কিছুক্ষণ পর প্রসূতির অবস্থাও অবনতি হলে ময়মনসিংহ নেয়ার পথে তিনিও মারা যান।’
অভিযোগ রয়েছে, ‘আল্পনা আক্তারের পরিবারকে ম্যানেজ ও ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই দিন রাতেই জরিমানা হিসেবে ব্যাংকের একটি চেক তুলে দিয়েছেন হাসপাতালের মালিক। আগেও একই হাসপাতালে সিজারের সময় প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সরকারি কোনো অনুমোদন না থাকলেও মাতৃছায়া হাসপাতালে অবৈধভাবে অপারেশন থিয়েটার বসানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে সরিষাবাড়ী মাতৃছায়া হাসপাতালের মালিক নজরুল ইসলাম তারার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এখানে এমন কোনো অপারেশনই হয় না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘সরিষাবাড়ী উপজেলায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন রয়েছে, আরো একটি লাইসেন্স নবায়নের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছে। কিন্তু মাতৃছায়া হাসপাতালের লাইসেন্স বা অপারেশনের কোনো অনুমোদন নেই। অননুমোদিত অপারেশন কিংবা অবহেলাজনিত কারণে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’