২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আমি রেজাল্ট চাই না, আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই : শহিদ সবুজ মিয়ার মা

শহিদ সবুজ মিয়া - ছবি : বাসস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ সবুজ মিয়ার কলেজের স্যারদেরথেকে যখন জানতে পারি আমার ছেলে সবুজ এইচএসসি পরীক্ষায় ভালোভাবেই পাস করছে, তখন আমি বলেছি, স্যার রেজাল্ট চাই না, আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। এই কথাগুলো বলেছেন শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ সবুজ মিয়ার মা মোছা: সমেজা বেগম।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট শেরপুর জেলা শহরের খরমপুর এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে শহিদ হন সবুজ মিয়া (১৯)। সবুজ শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের পূর্ব রূপারপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে। সে চলতি বছর ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীন শ্রীবরদী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ১৫ অক্টোবর সবুজের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। সবুজ জিপিএ-৪.৩৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।

নিহত সবুজের বাবা আজাহার আলী পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত। কোনো কাজ করতে পারেন না। তিন সন্তানের মধ্যে সবুজই বড়। অন্য দুই ভাই-বোন স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়ালেখা করে। পড়ালেখার পাশাপাশি সবুজ স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতো। ওই আয় দিয়ে কোনো রকম পরিবার ও নিজের পড়ালেখার খরচ মেটাতো। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সবুজের মৃত্যুতে পরিবারটি আর্থিকভাবে চরম সঙ্কটে পড়েছে।

শ্রীবরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম আলিফ উল্লাহ আহসান জানান, সবুজ মিয়া অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। পরিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে তাকে রোজগার করতে হতো বিধায় এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৩৩ পেয়েছে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, সবুজ মিয়া নিহতের ঘটনায় সদর থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার বাদি সবুজের ভাই সাদ্দাম হোসেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ২৫ জন।

এস আই পুলক কুমার রায় বাসসকে জানান, এই মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শেরপুর-১ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো: ছানুয়ার হোসেন, শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ ডি এম শহিদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, আওয়ামী লীগের ২৫ জন নেতা-কর্মীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩০০ থেকে ৪০০ জন। পুলিশ মামলাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে। সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement