খোলা আকাশের নিচে শত শত পরিবার
- খাদেমুল বাবুল, জামালপুর
- ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:১১
অসময়ে উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে বাড়ছে যমুনার নদীর পানি। এতে জামালপুরের মাদারগঞ্জ পকরুল, ইসলামপুরের কাঠমা ও বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার মানিকদারসহ তিনটি গ্রামে চলছে তীব্র নদী ভাঙন।
গত কয়েক দিনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে কয়েক শ’ ঘরবাড়ি। প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে চলছে তীব্র এই নদী ভাঙন।
স্থানীয়রা জানান, গত দুই সপ্তাহের তীব্র নদী ভাঙনে তিন উপজেলার তিনটি গ্রামের তিন থেকে চার হাজার পরিবারের কয়েক মানুষ ভিটামাটি ও ফসিল জমি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। দুই জেলার তিন উপজেলার ত্রিসীমানায় নদী ভাঙনের তীব্রতা চললেও খবর রাখেননি কেউ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাঙনের তীব্রতা এতোই বেশি যে দুর্গতরা তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় টুকুও পাচ্ছে না। এসব পরিবার ঘরবাড়ি-বসতভিটা হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়ি কিংবা ভাড়া করা জমিতে। কেউ কেউ এলাকায় আশ্রয় না পেয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বন্যার পর টানা বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনার পানি বাড়ায় গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে নদী ভাঙনের তান্ডব লিলা।
মফিজ উদ্দিন খোকন বলেন, তিন উপজেলার তিন গ্রামের অন্তত দুই হাজার পরিবারের ভিটামাটি নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে। ফসিল জমিসহ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ১০ হাজারের অধিক মানুষ।
ইসলামপুরের নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাঠমা গ্রামের খবির উদ্দিন বলেন, বগুড়ার সারিয়াকান্দীর মানিকদার, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কাঠমা এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার পাকরুল গ্রামটি দুই জেলা ও তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় খোঁজ রাখছেন না কেউ।
স্থানীয়দের মনে করেন বর্তমান সরকার নদী ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষকে নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করবেন এটাই প্রত্যাশা তাদের।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মো: নকিবুজ্জামান খান জানান, মাদারগঞ্জ উপজেলার পাকেরদহ এলাকায় ৬ দশমিক ৭৫ মিটার যমুনার বামতীর সংরক্ষণে ৫৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। যার ৫০৫ কোটি টাকা চুক্তিমূল্যে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ইতোমধ্যে ৪৩৪ কোটি টাকার কাজ সম্পুর্ণ হয়েছে। উদ্বৃত্ত ৭১ কোটি টাকার মধ্যে ৬৭ কোটি টাকা দিয়ে পাকরুল এলাকায় ভাঙন রোধে এক হাাজর ৫০০ মিটার কাজ করার জন্য একটি প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৭১ কোটি টাকা ফেরৎ পাঠানো হয়েছে। তবুও ভাঙন রোধে বরাদ্দটি চেষ্টা আবারো আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে নয়া দিগন্তকে জানান এই প্রকৌশলী।
এই পরিস্থিতিতে নদী ভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে তিন গ্রামের শত শত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা