০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১,
`

নালিতাবাড়ীতে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ৯টি ইউনিয়ন প্লাবিত

নালিতাবাড়ীতে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ৯টি ইউনিয়ন প্লাবিত - ছবি : নয়া দিগন্ত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি সড়কে পানি গড়িয়ে যাচ্ছে যেকোনো সময় সড়ক ভেঙে যেতে পারে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অন্তত সাত হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষ।

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে ও নদীর পাড় গড়িয়ে পানি উপচে পড়ছে।

জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জনিয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। চেল্লাখালী নদীর পানি ২১ দশমিক ৯৫ মিলিমিটার ও ভোগাই নদীর পানি এক হাজার ৭১৪ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে নদী দুটির পানি বাড়তে শুরু করে। রাতে পানির তোড়ে পোড়াগাঁও, নন্নী, নয়াবিল, কাকরকান্দি, রামচন্দ্রকুড়া, মরিচপুরান, রূপনারায়নকুড়া, যোগারিয়া ও বাঘবেড় ইউনিয়নসহ পৌরসভার গড়কান্দা ও নিজপাড়া, চকপাড়া ও তারাগঞ্জ দক্ষিন বাজার এলাকা প্লাাবিত হয়। এসব এলাকার বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে প্রবল বেগে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

ভোগাই নদীর তীরবর্তী নয়াবিল শিমুলতলা, ঘাকপাড়া, মন্ডলিয়াপাড়া, খালভাঙ্গা ও পৌরসভার গড়কান্দা ও নিজপাড়া-সংলগ্ন বাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে কয়েক হাজার বাসাবাড়িতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ভোগাই নদীর বিভিন্ন অংশে বাঁধ উপচে ও পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে নালিতাবাড়ী পৌর শহর থেকে নয়াবিল, নালিতাবাড়ী বাজার থেকে ঘাকপাড়া, নালিতাবাড়ী বাজার থেকে কদমতলি ও বোর্ডঘর বাজার যাতায়াত সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

ভোগাই নদীর দুটি পয়েন্টের পানি যথাক্রমে ২১ দশমিক ৯৫ এবং ১৭ দশমিক ১৪ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে শহরের ভোগাই নদীর সেতুর ওপর থেকে তোলা ভোগাই নদীর দুটি পয়েন্টের পানি যথাক্রমে ২১ দশমিক ৯৫ এবং ১৭ দশমিক ১৪ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে চেল্লাখালী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বারমারি, বাতকুচি, সন্ন্যাসীভিটা এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-নালিতাবাড়ী ভায়া গাজিরখামার সড়ক। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাতকুচি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সময় গ্রামটির মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করেছেন নালিতাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

এ ছাড়া নন্নী-আমবাগান সড়ক, নন্নী-মধুটিলা ইকোপার্ক সড়ক, আমবাগান-বাতকুচি সড়ক চেল্লাখালী নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব সড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে।

নন্নী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো: আবদুল্লাহ বলেন, টানা বর্ষণ ও চেল্লাখালী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নন্নী ও পোড়াগাঁও ইউনিয়নের যাতায়াত সড়ক ডুবে আছে। এ ছাড়া নদীর পাড়ের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব দুর্গত বাসিন্দাদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে প্রশাসন তৎপরতা চালাচ্ছে। উদ্ধারকাজের জন্য ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারের মজুদ রয়েছে। সবাই মিলে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement