২২ আগস্ট ২০২৪, ৭ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ সফর ১৪৪৬
`
বিআইডিএসের প্রতিবেদন

স্বাস্থ্যসেবায় খরচে দারিদ্র্যসীমার নিচে যাচ্ছে ৩.৭ শতাংশ মানুষ

-

কম সরকারি বরাদ্দ এবং যা বরাদ্দ হয় সেটিও সঠিকভাবে কার্যকর না হওয়ায় বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার ৭৩ শতাংশ ব্যয় মানুষের পকেট থেকে মেটাতে হয়। আর এই খরচ বহন করতে গিয়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। অর্থাৎ প্রায় ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দরিদ্র হতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে মোট দারিদ্র্যতার হার ২২ শতাংশের ওপরে চলে যাচ্ছে বলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। বিআইডিএস বলছে, স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যয় সবচেয়ে বেশি আফগানিস্তানে ৭৭ দশমিক ২০ শতাংশ। এরপরই রয়েছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে ওষুধ কিনতে, যার পরিমাণ ৫৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে ডায়াগনস্টিকের জন্য ২৭ দশমিক ৫২ শতাংশ, কনসালটেশনের জন্য ১০ দশমিক ৩১ এবং পরিবহণের জন্য খরচ হয় ৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ অর্থ। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. সামন্তলাল সেন বলেন, অনেক অবৈধ ফার্মেসি আছে। এসব বিষয় দেখার জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ডিজিকে আরো শক্ত হতে হবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিআইডিএসের সেমিনার কক্ষে সংস্থার মহাপরিচালক ড. বিনায়েক সেনের সভাপতিত্বে গতকাল এক আলোচনায় প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন সংস্থার গবেষক ড. আব্দুর রাজ্জাক সরকার। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: সামন্ত লাল সেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি পরিবারের একজন সদস্য হাসপাতালে ভর্তি হলে গড়ে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। আর এ খরচের প্রায় ৫৪ শতাংশ ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রেও মোট ব্যয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ ওষুধের পেছনে চলে যায়। আর এসব ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হয়। ফলে ঋণ করে খরচ বহন করতে হয় ২৬ শতাংশ মানুষের। আর ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে সম্পদ বিক্রি করে দিতে হয়। তাই মানুষের স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় কমাতে ইন্স্যুরেন্স ব্যবস্থা প্রণয়নের পরামর্শ দেন এ গবেষক। গত কয়েক বছর ধরে দেশে ওষুধের দাম বাড়ছে বলেও তিনি জানান।
গবেষণাপত্রে ড. আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, ১৯৯৭ সালে চিকিৎসার পেছনে মানুষের পকেট থেকে চলে যেত ৫৫ দশমিক ৯ শতাংশ অর্থ। সেটি বেড়ে ২০২০ সালে হয়েছে ৬৮ শতাংশ, সর্বশেষ ২০২১ সালের হিসাবে সেটি আরো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ শতাংশে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে তুলনা করে তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যয় সবচেয়ে বেশি আফগানিস্তানে ৭৭ দশমিক ২০ শতাংশ। এরপরই রয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে ব্যয় হয় ৭৩ শতাংশ। এ ছাড়া পাকিস্তানে ৫৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, নেপালে ৫১ দশমিকম ৩০, ভারতে ৪৯ দশমিক ৮০, শ্রীলংকায় ৪৩ দশমিক ৬০, ভুটানে ১৮ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম খরচ হয় মালদ্বীপে ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ অর্থ।


আরো সংবাদ



premium cement