পীরগঞ্জে অপহরণের পর শিশুকে হত্যা
- রংপুর অফিস ও পীরগঞ্জ সংবাদদাতা
- ১০ জুন ২০২৪, ০১:০০
চার বছরের এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় থমথমে রংপুরের পীরগঞ্জ। পরিস্থিতি সামাল দিতে টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকার বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিল্পী বেগমকে আটকের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি, অপহরণের পর পাচার করতে ব্যর্থ হয়ে শিশুটিকে হত্যা করে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়া হয়।
গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, পীরগঞ্জের একবারপুর গ্রাম পুলিশে পুলিশে ঠাসা। আদম নামের চার বছরের এক শিশুকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয়ার ঘটনায় অভিযোগ ওঠে ওই গ্রামের শিল্পী বেগম (৪৫) ও তার তৃতীয় স্বামী মোকসেদ আলীর (৩৫) বিরুদ্ধে। এ নিয়েই দেখা দেয় উত্তেজনা।
গত ৭ জুন দুপুরে নিখোঁজ হয়েছিল স্থানীয় জাকারিয়ার ছেলে আদম। থানায় ডায়েরিসহ বিভিন্ন জায়গায় এবং আশপাশের ডোবানালা, পুকুর এবং বাসাবাড়িতে খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিল না আদমকে। এরই মধ্যে সন্দেহ হয় শিল্পী বেগমের বাড়ি ঘিরে। তখন থেকেই এলাকাবাসী ঘিরে রাখে তার বাড়ি। শনিবার বিকেলে পুলিশের উপস্থিতিতে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালালেও ওয়্যারড্রবের পাল্লা খুলতে দেননি গৃহকর্মী শিল্পী। তাতে সন্দেহ আরো দানা বেঁধে ওঠে। ওই দিন মাগরিবের নামাজের পর শিল্পীর বাড়ির পাশের পুকুরে রক্তাক্ত অবস্থায় মুখে স্কচটেপ মারা আদমের লাশ উদ্ধার হয়।
জাকারিয়ার বোন আফরোজা জানান, পুলিশের অনুমতি নিয়ে চৌকিদারের সহযোগিতায় এলাকাবাসী এবং আমরা যখন শিল্পীর বাড়ি তল্লাশি করি তখন ওয়্যারড্রবের দরজা খুলে দেননি। এতে আমাদের আরো সন্দেহ হয়। পুলিশ আমাদেরকে ওই বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা বাড়িতে এসেই শুনতে পারি মাগরিবের নামাজের পর ওই পুকুরে ভাতিজা আদমের লাশ পাওয়া গেল; পাশেই ছিল জুতা। পাচার করতে না পেরে ভাতিজাকে হত্যা করে শিল্পী এবং মোকসেদ।
এ ঘটনায় সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী শিল্পীর বাড়িতে হামলার চেষ্টা চালায়। রাত ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত টিয়ার শেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।
পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আদম হত্যায় স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সঠিক তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীর বিরুদ্ধেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুলতানা রাজিয়া জানান, আমাদের টিম তদন্ত করছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করা সহজ হবে।