নাগালে সিগারেটের দাম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নিম্নআয়ের মানুষ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
রামপুরায় একটা ছোট দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন মোবারক হোসেন। রিকশা চালিয়ে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে সংসার চলে তার। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চা আর রুটি না খেলে নাকি শক্তি পান না। চা দিয়ে রুটি খেয়ে ধরালেন সিগারেট।
সিগারেট কেন? হেসে ফেলেন মোবারক হোসেন। ‘নেশা হয়ে গেছে ভাই। এক টান না দিলে ভালো লাগে না।’ মোবারক হোসেন যে চা খেলেন তার দাম ১০ টাকা। রুটির দাম ১০ টাকা। আর যে সিগারেটটা ধরালেন তার দাম পাঁচ টাকা। সিগারেট আরো কয়েকটা নিলেন, রেখে দিলেন পকেটে।
নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ে। চিনি, দুধ, ময়দার দাম বাড়ে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ে চা-রুটি-বিস্কুটের দামও। দাম দিয়েও মানুষ এসব জিনিস খাচ্ছে। হয়তো কোনো সময় পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে। কিন্তু বছরের পর বছর সিগারেটের দামটা হাতের নাগালেই থেকে যায়। অন্য সব পণ্যের দাম বাড়লেও হাতের নাগালেই থেকে যাচ্ছে সিগারেটের দাম। যার কারণে দরিদ্র হোক বা ধনী হোক ধূমপান থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না মানুষকে। খাবারের অর্ধেক দামে মিলছে সিগারেট।
সিগারেটের বাজারের ৮০ শতাংশই নিম্নস্তরের সিগারেটের দখলে। নিম্নআয়ের মানুষ মূলত এসব সিগারেটের ভোক্তা। কম দামে কেনা যায় বলে এসব সিগারেটের জনপ্রিয়তাও বেশি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিম্নস্তরের প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে। এর পর গত পাঁচ অর্থবছরে নিম্নœস্তরের সিগারেটের দাম মাত্র ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৪৫ টাকা। অর্থাৎ প্রতি বছর প্যাকেটপ্রতি গড়ে মাত্র ২ টাকা বেড়েছে।
২০২০ সালে উচ্চস্তরের সিগারেটের দাম ছিল প্রতি শলাকা ১৩ টাকা। ওই সময় নিম্নস্তরের সিগারেট ছিল প্রতি শলাকা ৪ টাকা। গত কয়েক বছরে উচ্চস্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানো হলেও সে অর্থে বাড়েনি নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম।
হাতের নাগালে দাম থাকায় নিম্নবিত্ত মানুষের হাতের কাছেই থাকছে সিগারেট। এতে অভ্যাস বদলানোর সুযোগ থাকছে না।
এ দিকে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের উৎস সিগারেট। বাজারের ৮০ শতাংশ সিগারেটই হলো নিম্নœস্তরের সিগারেট। এই স্তরের সঠিক মূল্য নির্ধারণ না করা গেলে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। উন্নয়ন সমন্বয়সহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানোর জোর দাবি জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যস্তরের সিগারেটের দামও বাড়ানো উচিত বলে তারা সোচ্চার রয়েছেন। সর্বস্তরের সিগারেট প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেট যদি ১০ টাকা করেও বাড়ানো হয় তবে অন্তত ৬-৭ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব বলে মনে করে সংগঠনগুলো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা