ডুজার ইফতারে ছাত্রনেতাদের মিলন মেলা
- ঢাবি প্রতিবেদক
- ৩০ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৩
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে মতবিরোধ ভুলে গিয়ে মিলন মেলায় পরিণত হয়।
গতকাল (শুক্রবার) ঢাবির ছাত্র শিক্ষককেন্দ্র (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় এই ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ‘শিক্ষাঙ্গনে সঙ্কট : ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রখ্যাত ভাষাসৈনিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবুল কাশেম ফজলুল হক।
তিনি বলেন, ১৯২১ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল এবং পাকিস্তান আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তা অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তন পরিবর্ধিত হয়েছে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে আরো পরিবর্তন আনা জরুরি। আমি ভিসি ও প্রশাসনের সবাইকে অনুরোধ জানাই, যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় আরো উন্নয়ন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের আস্থার সংগঠন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে নতুন করে ভাবা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা ছাত্রনেতাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক বক্তব্য শুনেছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকুক। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক। প্রশাসন চায় বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে নিয়ে যেতে শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংঠনের সহযোগিতা প্রয়োজন। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। এটি শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রমকে প্রসারিত করে। নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ পেলে আমরা নির্বাচনের আয়োজন করতে পারি। তবে এই দায়িত্ব প্রশাসন বা কোনো ছাত্রসংগঠনের একার নয়। এতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করবে। তাহলেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেস্ট হিউম্যান রিসোর্স প্রোভাইড করতে পারব।
আলোচনা সভায় ছাত্র সংগঠনের নেতারা ডাকসু নির্বাচনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ, শিক্ষার্থীদের অবাধ রাজনৈতিক চর্চায় ডাকসুর ভূমিকা রয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের আইনি অধিকারও। আমরা বিশ্বাস করি ছাত্র রাজনীতিকে আরো স্মার্ট ও যুগোপযোগী করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন জরুরি। এর মাধ্যমে ক্যাম্পাস ভায়োলেন্স কমিয়ে আনা সম্ভব। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সঙ্কট, লাইব্রেরি সঙ্কট ও অন্যান্য সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাস্টারপ্লান দ্রুত সময়ে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ঢাবি প্রশাসনকে বলেন, আজকে ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করে রাখা হয়েছে, যা আধুনিক যুগের ছাত্র রাজনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমরা চাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাকসুর নির্বাচন যেন অতি দ্রুত দেয়া হয়। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদের মিটিং করা প্রয়োজন। ক্যাম্পাসের সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের অবাধ নির্বাচন ও বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। হলগুলো রাজনৈতিক সংগঠন কাছ থেকে মুক্ত করে শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা হোক।
সভাপতির বক্তব্যে ডুজা সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের মতানৈক্য দেখি বা ক্যাম্পাসে তাদের সহাবস্থান সেভাবে লক্ষ্য করি না। তবে আজকে ডুজার আয়োজনে সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোকে আমরা এক ছাদের নিচে আনতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য একটা বিশেষ প্রাপ্তি। আমরা সাংবাদিক সমিতি চাই ক্যাম্পাসে সবসময়ই রাজনৈতিক সহাবস্থান বিরাজ করুক এবং শিক্ষার্থীরা সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা করার সুযোগ লাভ করুক।
ডুজার সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা