২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সেফটি অ্যান্ড রাইটস জরি

করোনায় বড় ছুটির পরও কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩২ শ্রমিক

-

সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে বিগত এক বছরে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর,২০২০) সারা দেশে ৩৭৩টি কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় ৪৩২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৪২৩টি কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় মোট ৫৭২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছিল। উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের মহামারীর কারণে ২৬ মার্চ ২০২০ থেকে ৩১ মে ২০২০ পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকার পরেও দুর্ঘটনা এবং নিহত শ্রমিকের সংখ্যা কমেনি।
বেসরকারি সংস্থা সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি ২৬টি দৈনিক সংবাদপত্র (১৫টি জাতীয় এবং ১১টি স্থানীয়) মনিটরিং করে বছর শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার এক রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। যেসব শ্রমিক কর্মক্ষেত্রের বাইরে অথবা কর্মক্ষেত্র থেকে আসা-যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় তাদের সংবাদপত্র জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
সংবাদপত্রের কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক নিহত হয়েছে পরিবহন খাতে যাদের সংখ্যা মোট ১৬৮ জনের পরেই রয়েছে নির্মাণ খাত এই খাতে, নিহত হয়েছে ১১৭ জন, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে (যেমন-ওয়ার্কশপ, গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি) ৮৬ জন, কলকারখানা ও অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে ৪৫ জন এবং কৃষি খাতে এই সংখ্যা ১৬ জন।
মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৭ জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৯৬ জন; ছাদ, মাঁচা বা ওপর থেকে পড়ে মারা গেছে ৪৩ জন; শক্ত বা ভারী কোনো বস্তুর দ্বারা আঘাত বা তার নিচে চাপা পড়ে ৩৬ জন; পাহাড় বা মাটি, ব্রিজ, ভবন বা ছাদ, দেয়াল ধসে ১৯ জন; আগুনে পুড়ে ১৮ জন; বজ্রপাতে ১১ জন; রাসায়নিক দ্রব্য বা সেপটিক ট্যাঙ্ক বা পানির ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ১০ জন এবং অন্যান্য কারণে ২২ জন শ্রমিক নিহত হয়।
সেইফটি অ্যান্ড রাইটসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, শ্রমজীবীর জীবনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তাদের সুরক্ষার জন্য শ্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাকে আরো সচেতন হতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে যেকোনো ব্যয়কে বিনিয়োগ মনে করতে হবে।
জরিপের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবস্থা, আইন প্রয়োগে বাধা ইত্যাদি কারণে দুর্ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। তা ছাড়া যত্রতত্র কলকারখানা গড়ে উঠায় দুর্ঘটনায় শুধু শ্রমিক নয় সাধারণ জনগণও আক্রান্ত হচ্ছে। এসব দুর্ঘটনা প্রতিহত করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।
সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি একটি অধিকার রক্ষাকারী সংগঠন হিসেবে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেফটি অ্যান্ড রাইটস বিশ^াস করে একমাত্র সবার যৌথ প্রচেষ্টাই পারে কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা থেকে শ্রমিকের জীবন বাঁচাতে। আর সরকার এ সংক্রান্ত আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে এবং মালিক কর্তৃক গৃহীত কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করবে। বিজ্ঞপ্তি।

 


আরো সংবাদ



premium cement