সমস্যার সময় একটি গোষ্ঠী সুযোগ নিতে চায় : সিপিডিহ
- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৯ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
সিপিডির সংলাপে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগের সাথে প্রবৃদ্ধির অসঙ্গতি রয়েছে। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়ছে না। স্থবির হয়ে আছে। স্থানীয় বিনিয়োগ না বাড়লে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে না। আর তাই সে হারে কর্মসংস্থানও হচ্ছে না। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য সরকারি বিনিয়োগ অনেক বেশি বাড়াতে হবে। সিপিডি বলছে, ব্যাংকিং খাতের সূচকগুলোর দুর্বলতা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এই দুর্বলতা আমাদের অর্থনীতিকে আরো দুর্বল করে দিতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া।
‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা : কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ ও টেকসই এলডিসি উন্নয়ন’ শীর্ষক গতকাল এক ভার্চুয়াল সংলাপে অর্থনীতিবিদ ও বিজ্ঞজনেরা এই অভিমত ব্যক্তি করেন। সিপিডির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সংস্থার সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। বক্তব্য রাখেনÑ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার নিশাত কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, রাজনৈতিক ব্যক্তি রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।
উপস্থাপনায় বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংকিং খাতের সূচকগুলোর দুর্বলতা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এই দুর্বলতা আমাদের অর্থনীতিকে আরো দুর্বল করে দিতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া। তিনি বলেন, সমস্যা যখন আসে, তখন একটি গোষ্ঠী থাকে সেই সুযোগটা ব্যবহার করার জন্য। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সেটি যেন না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাকা দরকার। আমাদেরকে রফতানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আরো তৎপর হওয়া প্রয়োজন।
সিপিডি বলছে, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ প্রত্যাশিত পরিমাণে হচ্ছে না। আর তাই সে হারে কর্মসংস্থানও হচ্ছে না। জিডিপিতে কৃষির অবদান কমছে। মোট কর্মসংস্থানের ৩৮ শতাংশ হলো কৃষির। উদ্বেগের বিষয় হলোÑ শ্রমের উৎপাদনীলতা অনেক কম।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যেসব উচ্চ আশা ছিল তা আমরা অর্জন করতে পারিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশের আর্থিক খাতের জবাবদিহিতা কোথাও নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক কি তাদের ভূমিকা রাখতে পারছে? অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ করা হয়েছে। সেখান থেকে অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আসছে। সেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী করবে? তিনি বলেন, মেজর কোনো সংস্কার এসব খাতে করা হচ্ছে না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আজ নিম্নমুখী। তাদের মধ্যে কোনো পেশাদারিত্ব পাবেন না। তিনি বলেন, সরকার বলছে বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে; কিন্তু সেই বাড়তি বিদ্যুৎ নিয়ে যাচ্ছে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো। বাংলাদেশে বিনিয়োগের সাথে প্রবৃদ্ধির অসঙ্গতি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে বিশ্বে আজ প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াও আজ প্রশ্নবিদ্ধ।