দেশ ত্যাগের সময়ে বিমানবন্দরে জালনোটসহ গ্রেফতার ৪
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:২৬
শামিমা নূর পাপিয়া (২৪)। সে নরসিংদী সদরের ব্রাহ্মন্দী গ্রামের মফিজুর রহমানের স্ত্রী। সবার কাছে পিউ বলেই সে বেশি পরিচিত। রাজধানীর এফডিসি গেটের পাশেই তার কার সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা। সে নিজেকে একজন ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিলেও মূলত এই নারী একজন মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। তবে কোনো কাজ বাগিয়ে নেয়ার জন্য সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করত সে। অভিজাত হোটেলের বিভিন্ন কক্ষ সারারাত ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির মনোরঞ্জনে তাদের সরবরাহ করত। পাপিয়া গত তিন মাসে শুধু ওয়েস্টিন হোটেলে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করেছে। তার নামে ওয়েস্টিন হোটেলের প্রেসিডেন্ট স্যুট সবসময় বুকড থাকত। হোটেলে প্রতিদিন শুধু বারের খরচ বাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করত। দীর্ঘদিন ধরেই এসব করে আসছিল পাপিয়া। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে এই নারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সে ও তার তিন সহযোগী শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে পালানোর সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জালনোট, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলার উদ্ধার করা হয়। তার সাথে গ্রেফতার হওয়া তিন সহযোগী হলোÑ পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮) ও পাপিয়ার ব্যক্তিগত পিএস শেখ তায়্যিবা (২২) ও সাবিক্ষর খন্দকার (২৯)। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল।
তিনি বলেন, রাজধানীর গুলশানের অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিনে প্রেসিডেন্ট স্যুট নিজের নামে সবসময় বুকড করে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিল শামিমা নূর পাপিয়া নামে এই নারী। যিনি হোটেলটির বারে বিল বাবদ প্রতিদিন পরিশোধ করত প্রায় আড়াই লাখ টাকা। সেখানে থাকা তার সাত নারীর কথা জানতে পেরেছে র্যাব। যাদের সে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করত। তিনি জানান, শামিমা নূর পাপিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সমাজসেবার নামে নরসিংদী এলাকায় অসহায় নারীদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সহযোগিতার নামে তাদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত করত সে। বছরের অধিকাংশ সময় সে নরসিংদী ও রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে এবং সেখান থেকে তার ও তার স্বামীর ব্যবসায়িক অংশীদারদের অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ করত। নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য তার একটি ক্যাডার বাহিনী আছে। এ ছাড়াও তার স্বামীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে সে নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লটসহ বিপুল নগদ অর্থের মালিক হয়েছে। র্যাবের হাতে আটক হওয়া সাবিক্ষর খন্দকার জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে পাপিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবং তার দূর সম্পর্কের ভাই। সে তার সাথে সব সময় অবস্থান করে। পাশাপাশি তার সব অবৈধ ব্যবসায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং অর্থ পাচার ও রাজস্ব ফাঁকি দিতে সহযোগিতা করে এই সাবিক্ষর।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা