২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ শাবান ১৪৪৬
`

একটি পরিবারকে আমানতের ৮৭ শতাংশ দেয়া হয়েছে : গভর্নর

-

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বিগত সরকারের সময়ে একটি পরিবারকে আমানতের ৮৭ শতাংশ দিয়ে দেয়া হয়েছে। এভাবে ব্যাংক খাতকে লুট করা হয়েছে। এর ফলে ওই সব বাংক বাঁচানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি গুড গভর্নেন্সের (সুশাসন) মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। তবে, কিছু কিছু ব্যাংকের বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অর্থনীতির পুনর্বিন্যাস বিষয়ে টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ’ শীর্ষক দুই দিনের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ম্যাক্রো-ইকোনমিক পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স ইন দ্য ব্যাংকিং সেক্টর সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি। সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএবির চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার, আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ।
গভর্নর বলেন, এই মুহূর্তে নতুন করে ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ার চিন্তা করছি না। এর বদলে এমএফএস-কে আন্তঃলেনদেনযোগ্য কিভাবে করা যায়, সে চিন্তা করছি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) টিকে থাকলেও ব্যাংকে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না- এমন নীতিমালা করা হচ্ছে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, ‘এফআইডি ব্যাংক খাতে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। তারা চাইলে বীমা কোম্পানি টেক-কেয়ার করতে পারে, তবে ব্যাংক নয়।’ গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাতকে উদ্ধারের জন্য ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকেই সমস্যা আছে। তাদের মনিটরিং করা হচ্ছে। বেশকিছু সরকারি ব্যাংকেরও প্রচুর সমস্যা আছে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমি একটা সু-খবর দিতে চাই, ইসলামী ব্যাংক ও ইউসিবি, এই দুইটা ব্যাংক মোটামুটি গ্র্যাজুয়েটেড হয়ে যাবে আশা করি। তারা নতুন করে কোনো আর্থিক সাপোর্ট চাচ্ছে না। তাদের যে বিধিনিষেধগুলো আছে সেগুলো ধীরে ধীরে তুলে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। তারা নতুন ঋণ দিতে পারছে না, তারা যেন ছোট ছোট ঋণ দিতে পারে সেটি বিবেচনা করা হচ্ছে। তারা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। বাকি ব্যাংকগুলোর বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আমরা তাদের অ্যাসেট রিভিউ করছি। আগামী এপ্রিলের মধ্যে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নেব।
এ সময় গভর্নরের বক্তব্যের বিরোধিতা করে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অনেক গুণী ব্যক্তি; কিন্তু তার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, ওটা দুর্বল ব্যাংক, ওটা সবল ব্যাংক- যতদিন এসব বলা বন্ধ না করবেন ততদিন ব্যাংকিং সেক্টর ঠিক হবে না। উনি অনেক কিছুই ভালো করছেন। আমাকে তারাই আবার এ ব্যাংকে পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে আমি যখন চলে আসি তখন সেটি ইসলামী ব্যাংক থেকেও ভালো ব্যাংক ছিল। এখন সেটি সবচেয়ে খারাপ ব্যাংক এটি আমিও মানি। অর্থনীতিবিদরা কেবল বলেন, ব্যাংক বন্ধ করে দেন, আমি বলি অর্থনীতিটাকেই বন্ধ করে দেন।
জিডিপির তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, জিডিপির সঠিক হিসাব আসলে কত। এখন শুনছি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছেড়ে যাবে। আবার একটি পত্রিকায় বলা হয়েছে এটি ৩৪০ বিলিয়নের বেশি হবে না। কত টাকা ছাপাতে হবে, কত টাকা ছাপানো আছে- এটা আমরা কেউ জানি না। তথ্য বলছে, জিডিপির ৩ শতাংশ টাকা ছাপানো আছে।


আরো সংবাদ



premium cement