২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ শাবান ১৪৪৬
`
সিপিডির সম্মেলনে বক্তারা

দেশে অতিসংবেদনশীল বিভাজিত ও শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা সৃষ্টি হয়েছে

-


দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অনেকগুলো স্তরে বিভাজিত। দেশে অতিসংবেদনশীল বিভাজিত, শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। শিক্ষা কাঠামোতে থাকা এত উপধারা বৈষম্য বাড়ানোর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এর কারণ, আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ কাঠামো (রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক) নেই বলে অভিমত জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেন, আমার সন্তানরা কোথায় পড়ছে, কী পড়ছে, তাদের আয়ের উৎস কী- এসব আমরা জানবো না, সেটি কীভাবে হয়। এমন বাস্তবতায় আমাদের একটি সমন্বিত ফ্রেমওয়ার্ক প্রয়োজন। যেখানে সবাই দায়বদ্ধ থাকবে। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মাধ্যম কিংবা কওমি মাদরাসা যেটাই হোক। বিভাজিত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।
রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টার ইনে ‘রিকমেন্ডেশনস বাই দ্যা টাস্কফোর্স অন রিস্ট্র্যাটেজিং দ্য ইকোনমি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে গতকাল বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে শিক্ষা, যুব বেকারত্ব ও যুব উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হয়। সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. রুমানা হক এবং বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাসরুর। তারা দু’জনই টাস্কফোর্সের সদস্য।

উপস্থাপনায় ড. রুমানা হক বলেন- প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার বর্তমান অবস্থা আদর্শের চেয়ে কম, বৈশ্বিক মান পূরণে ব্যর্থ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, ডিজিটাল সাক্ষরতা, আইসিটি জ্ঞান এবং বিশ্লেষণাত্মক চিন্তার দাবি করে, শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন। তিনি বলেন, বৃহৎ জনসংখ্যাকে মূল্যবান সম্পদে পরিণত করার মূল চাবিকাঠি হলো প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ। শিক্ষাব্যবস্থাকে মানসম্মত করা, পাঠদান এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি হালনাগাদ করতে হবে। আইসিটি সুবিধা প্রসারিত করতে অতিরিক্ত বরাদ্দ করতে হবে। প্রযুক্তির সহজলভ্যতা ও সরকারি ব্যয় ট্র্যাকিং করতে হবে।
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষার চাহিদা সর্বস্তরে বিদ্যমান। একজন রিকশাচালকও তার সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে চান। এটি ইতিবাচক। তবে বাস্তবতা হচ্ছে গত ৫৪ বছরে শিক্ষার এই চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারিনি। এটি আমাদের ব্যর্থতা। এখন এই ব্যর্থতা নিয়ে বসে থাকবো নাকি সামনে আগাবো, সে আত্মজিজ্ঞাসা করার সময় হয়েছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমেদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদিও ছাত্রদের কারণেই এসেছে, তবে শিক্ষা সংক্রান্ত কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই এই সরকার এসেছে। অথচ নানান সংস্কারের আলাপের মধ্যেও শিক্ষা নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে আলাপ-আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়নি। এই অবহেলা ৫৪ বছর ধরে চলে আসছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement