১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৪ শাবান ১৪৪৬
`

উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হার ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

-

ঢিমেতালে চলছে দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন। পটপরিবর্তনের পরও প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো ধরনের গতি নেই। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থববছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ২১.৫২ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ সময়ে খরচ হয়েছে উন্নয়ন বাজেটের মাত্র ৫৯ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। গতবার একই সময়ে খরচের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ তথ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র পাওয়া গেছে। জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসের হিসাবে দেখা গেছে, এডিপিতে গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম টাকা খরচ হয়েছে। চলতি বছরে বাকি আছে মাত্র পাঁচ মাস। এই সময়ে খরচের টার্গেট দুই লাখ ১৮ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। চলতি বছরে মোট উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এডিপিতে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। এর মানে আগেরবার প্রকল্পের মাধ্যমে যত টাকা খরচ করা হয়েছে, এবার তাও ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম টাকা খরচ হয়েছে এবার। জুলাই-আগস্টের আন্দোলন; ক্ষমতার পটপরিবর্তন এবং ঠিকাদার ও প্রকল্প পরিচালকদের খুঁজে না পাওয়া, এসব কিছুর প্রভাব পড়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, এর আগে জুলাই-জানুয়ারি হিসাবে কোভিডের বছরে (২০২০-২১ অর্থবছর) ৬১ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। পরের দুই বছরে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা করে খরচ হয়েছিল। এ ছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭১ হাজার ৫৩২ কোটি এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।
গত ছয় বছরে বাস্তবায়ন হার : গত ছয় বছরে প্রথম সাত মাসে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাস্তবায়ন হার ছিল ২৭.১১ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৮.১৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০.২১ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে একই সময়ে ২৮.৪৫ শতাংশ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩২.৪৫ শতাংশ।
সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১৫ মন্ত্রণালয় : এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ১৩ হাজার ৩০৯ কোটি ছয় লাখ টাকা বা মোট বরাদ্দের ৭৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর খরচ করতে পেরেছে গত সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৫০ হাজার ১৩৫ কোটি পাঁচ লাখ ৫১ হাজার টাকা, যা ২৩.৫ শতাংশ। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ৩৬.৫৫ শতাংশ। আর বিদ্যুৎ বিভাগ ৩৩.৬৪ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫.১৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগ (থোক বরাদ্দসহ) ২৯.৬৩ শতাংশ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ১৮.৫১ শতাংশ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৩.২৮ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৯.৯১ শতাংশ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ১১.৮৪ শতাংশ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ১৬.০২ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৬.৬৪ শতাংশ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২২.৯১ শতাংশ, সেতু বিভাগ ১৮.০৫ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ২৫.০১ শতাংশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ১৮.১৪শতাংশ এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ৯.৬৬ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে পেয়েছে। আর এটাকেই তারা এডিপির বাস্তবায়ন হার হিসেবে দেখিয়ে আসছে।


আরো সংবাদ



premium cement