আয়নাঘরের অনেক পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে : আযমী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আয়নাঘরের অনেক পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবদুল্লাহিল আমান আযমী। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘরের অনেক পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে যাতে করে নির্যাতনের মাত্রার আলামত সঠিকভাবে বুঝা না যায়।
প্রধান উপদেষ্টাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা গতকাল বহুল প্রতীক্ষিত আয়নাঘর পরিদর্শন করেন। আমাকে সফরসঙ্গী হিসেবে নেয়ায় আমি তার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বলতে দ্বিধা নেই, বাংলাদেশে তো বটেই, সম্ভবত সমগ্র পৃথিবীতে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন যে একজন সরকার প্রধান তার পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদ জালেম সরকারের জুলুমে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মজলুমকে সাথে নিয়ে নির্যাতনস্থল পরিদর্শনে গেছেন। পৃথিবীর সব শাসকের জন্য এটা একটা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
আযমী বলেন, দীর্ঘ ৮ বছর তথাকথিত আয়নাঘরে আটক থাকায় ধীরে ধীরে সেই স্থাপনার বিভিন্ন সেল, ইন্টারোগেশন রুম, সুপারভাইজারদের কক্ষসহ সেই স্থাপনার বিভিন্ন আনুষঙ্গিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য আমার জানার সুযোগ হয়েছিল। আজকের (গতকাল) এই পরিদর্শনের ফলে আমি সরেজমিন প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টাসহ চার উপদেষ্টা, গুম কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সব সদস্য এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরসহ গণমাধ্যমের ব্যক্তিদেরকে সরেজমিন অনেক কিছু বিস্তারিত অবহিত করার সুযোগ পাই। ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশে একটি সরকারি বাহিনী মানুষের সাথে কত নির্মম হতে পারে, কতটা অমানবিক হতে পারে এবং নির্যাতনের মাত্রা কতটা জঘন্য হতে পারে এসব বিস্তারিত জেনে তারা সবাই অত্যন্ত মর্মাহত হন। এ ধরনের একটি পরিদর্শন ভবিষ্যতে দেশকে ফ্যসিবাদমুক্ত রাখতে অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে আশা পোষণ করি।
তিনি আরো বলেন, আমি বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করেছি ইতোমধ্যেই ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘরের অনেক পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে, যাতে করে নির্যাতনের মাত্রার আলামত সঠিকভাবে বোঝা না যায়। উদাহরণস্বরূপ, দরজার গ্রিলের কপাট এবং স্টিলের দরজা খুলে কাঠের দরজা লাগানো হয়েছে, জানালার গ্রিল খুলে ফেলা হয়েছে, দরজা ও জানালার কাচের চার স্তর কালো রঙের আস্তর মুছে কাচ পরিষ্কার ও স্বচ্ছ করে ফেলা হয়েছে, দেয়াল ভেঙে ভেন্টিলেটার বানানো হয়েছে, ছোট দুই রুমের মাঝের দেয়াল ভেঙে রুমের সাইজ বড় দেখানো হয়েছে। যেই কক্ষে নির্যাতন করা হতো সেই কক্ষে নির্যাতন করার যত রকমের আলামত ছিল সব সরিয়ে ফেলা হয়েছে ইত্যাদি। এই অপকর্ম যারা করেছে তারা নিঃসন্দেহে অপরাধীদের দোষ ধামাচাপা দেয়ার জন্যই এই কাজ করেছে। অপরাধীদের অপরাধের মাত্রা কম দেখিয়ে তাদের বাঁচানোর বা শাস্তি লঘু করার চেষ্টার সাথে কারা জড়িত তা অনুসন্ধান করে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনার জন্য আমি সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, এ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরও তারা আজ পর্যন্ত গ্রেফতার না হওয়ায় আমি অত্যন্ত বিস্মিত। বলা বাহুল্য, প্রভাবশালী এ সব অপরাধী মুক্ত থাকায় আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও অত্যন্ত শঙ্কিত। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করার জন্য আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ‘জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড’ কথাটির গুরুত্ব অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুত গ্রেফতার করে সুবিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমিসহ সারা দেশে যত মানুষ গুম-খুনসহ আরো যত রকমের জুুলুমের শিকার হয়েছেন, সব অপরাধের দ্রুত বিচারের কাজ সম্পন্ন করে আমাদের ভোগান্তি কিছুটা লাঘব করার জন্য আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা