০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমলেও খাদ্যে ১১ ছুঁইছুঁই

গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ১০.১৮ শতাংশ
-

মূল্যস্ফীতির সার্বিক হার জানুয়ারিতে কিছুটা কমেছে। তবে দেশের মানুষকে খাদ্য কিনতে বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ৯.৯৪ শতাংশ হলেও খাদ্য খাতে এই হার ১০.৭২ শতাংশ। তবে শহর ও গ্রামে এই হার আরো বেশি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ (পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট) ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০.৮৯ শতাংশে। যা নভেম্বরে ছিল ১১.৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে জাতীয় মজুরির হার কিঞ্চিৎ বেড়েছে। ডিসেম্বরের ৮.১৪ শতাংশ থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৮.১৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে এটি মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গতকাল প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১.৬৬ শতাংশ। আগস্টে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১০.৪৯ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার সামান্য কমেছিল। ওই মাসে ছিল ৯.৯২ শতাংশ। অক্টোবরে ফের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। ওই মাস শেষে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০.৮৭ শতাংশ। নভেম্বরে এটি আরো বেড়ে দাঁড়ায় ১১.৩৮ শতাংশে।
বিবিএসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছরের তুলনায় মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। গত এক বছরের (ফেব্রুয়ারি ২০২৪-জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত) চলন্ত গড় মূল্যস্ফীতি নিরূপিত হয়েছে ১০.৩৪ শতাংশ। পূর্ববর্তী একই সময়ে (ফেব্রুয়ারি ২০২৩-জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত) চলন্ত গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৫৯ শতাংশ। সার্বিক ও শহরে মূল্যস্ফীতির হার এক অঙ্কের ঘরে নেমে এলেও গ্রামে এই হার এখনো ১০.১৮ শতাংশ। তবে খাদ্য বহির্ভূত খাতে জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার জানুয়ারিতে ছিল ৯.৯৪ শতাংশ, যা গত ডিসেম্বর শেষে ১০.৮৯ শতাংশ ছিল। আর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৯.৮৬ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার জানুয়ারিতে ছিল ১০.৭২ শতাংশ। যা ডিসেম্বরে ছিল ১২.৯২ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের ক্ষেত্রে এ হার ডিসেম্বরের ৯.২৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯.৩২ শতাংশে এসেছে জানুয়ারিতে।

গ্রামেও মূল্যস্ফীতির চাপ:
২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ১০.১৮ শতাংশে। যা ডিসেম্বরে ছিল ১১.০৯ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৯.৭০ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার গত ডিসেম্বরের ১২.৬৩ শতাংশ থেকে কমে জানুয়ারিতে এসে ১০.৬১ শতাংশ হয়েছে। যা আগের বছর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৯.৪১ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার ডিসেম্বরের ৯.৬৫ শতাংশ থেকে বেড়ে জানুয়ারিতে হয়েছে ৯.৭৭ শতাংশ। যেখানে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৯.১৯ শতাংশ।
শহরে খাদ্যপণ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি:
বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর শেষে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ১০.৮৪ শতাংশ ছিল। কিন্তু নতুন বছর ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে যা কমে হয়েছে ৯.৮৯ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এটি ছিল ৯.৯৯ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার জানুয়ারিতে কমে ১০.৯৫ শতাংশে আসে। যা ডিসেম্বরে ছিল ১৩.৫৬ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৯.৯৮ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ডিসেম্বরের ৯.১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে জানুয়ারিতে হয়েছে ৯.২৫ শতাংশ। তবে ২০২৪ সালে জানুয়ারিতে এটি ছিল ৯.৪৩ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির চাপে মজুরি হার:
বিবিএস বলছে, জানুয়ারি শেষে জাতীয় পর্যায়ে মজুরি হার (সাধারণ) হয়েছে ৮.১৬ শতাংশ (পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট)। যা ডিসেম্বরে ছিল ৮.১৪ শতাংশ। কিছুটা হলেও বেড়েছে। জানুয়ারিতে কৃষি, শিল্প, সেবা- তিন খাতে মজুরি হার যৎসামান্য বেড়েছে। মজুরি হার পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে কৃষিতে ৮.৪১ শতাংশ, শিল্পে ৭.৮০ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮.৪৪ শতাংশ। যা ডিসেম্বরে ছিল কৃষিতে ৮.৩৯ শতাংশ, শিল্পে ৭.৭৭ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮.৩৪ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement