বইমেলার স্টল নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
- সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক
- ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৩
বই মেলার স্টল নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি ও বইমেলা পরিচালনা কমিটি প্রকাশক প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে করা অভিযোগে বলা হয়, বাংলা একাডেমির এবারের স্টল বরাদ্দের আবেদনপত্রে স্পষ্ট লেখা আছে, ‘প্যাভিলিয়ন আবদ্দ থাকবে এবং এক দিক দিয়ে প্রবেশ ও অন্য দিক দিয়ে বের হওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
কিন্তু তাতে নিয়ম না মানার অভিযোগ করে বলা হয়, একুশে বইমেলা আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। এই মেলার নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করে বাংলা একাডেমি, যা অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের মেনে চলার কথা। কিন্তু এবারো দেখা যাচ্ছে, কিছু প্রকাশক নির্দিষ্ট নিয়ম লঙ্ঘন করে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ বাংলা একাডেমি নির্বিকার!
স্টল বরাদ্দের আবেদনপত্রের শর্তানুযায়ী, ‘প্যাভিলিয়ন আবদ্দ থাকবে এবং এক দিক দিয়ে প্রবেশ ও অন্য দিক দিয়ে বের হওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।’ কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বেশির ভাগ প্যাভিলিয়নপ্রাপ্ত প্রকাশকরা নিয়ম ভেঙে চার দিক খোলা রেখে প্যাভিলিয়ন বানাচ্ছেন! এতে বইমেলার শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে, সাধারণ দর্শনার্থীদের চলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে বাংলা একাডেমির নীতিমালাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে।
তাদের ভাষ্য, গায়ের জোরে মুষ্টিমেয় প্রকাশক নেতা নিজেদের জন্যে সুবিধাজনক নিয়ম তৈরি করছেন। আর বৈষম্যের শিকার হয়েছে সাধারণ প্রকাশকরা। তাদের ভাষ্য, এই অনিয়মের পেছনে একটা বড় অংশ হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার হাসিনার অনুগত দোসররা, যারা এক দিকে পালিয়ে বেড়ায়, অন্য দিকে নিয়ম ভেঙে নিজেদের সুবিধামতো কাজ করছে। তারা জানে, স্বৈরাচারের আমলাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বাংলা একাডেমি তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবে না। তাই তারা বুক ফুলিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করছে, আর একাডেমি তা দেখেও নীরব!
তবে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি ও বাংলাদেশ সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার পরিচালনা পর্ষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে কালো তালিকাভুক্ত প্রকাশকদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করেছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। মেলা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্যাভিলিয়ন বাতিল হওয়া প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- তাম্রলিপি, কাকলী প্রকাশনী, পাঠক সমাবেশ, পুঁথিনিলয়, সময়, মিজান পাবলিশার্স, চারুলিপি, জিনিয়াস পাবলিকেশন, নালন্দা, পার্ল পাবলিকেশন, বিশ্বসাহিত্য ভবন ও শব্দ শৈলী। এ ছাড়া বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে প্রকাশনা জগতে পরিচিত আগামী প্রকাশনী, অন্যপ্রকাশ ও অনুপম প্রকাশনীর প্যাভিলিয়ন সাইজ ২৪/২৪ থেকে কমিয়ে ২০/২০ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া ১০০টি নতুন প্রকাশনা সংস্থা যুক্ত হওয়াতে এবার মেলার পরিধি আরো বাড়ানো হয়েছে। পূর্বে প্রতি বছর চার থেকে সাড়ে ৪০০ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশগ্রহণ করে আসছে। এর মধ্যে প্যাভিলিয়ন ৩৪টি প্রতিষ্ঠান, চার ইউনিট ২৫টি প্রতিষ্ঠান, তিন ইউনিট ৫০টি প্রতিষ্ঠান, দুই ইউনিট ১৬৫টি এবং এক ইউনিট ১৬৬টি প্রতিষ্ঠান।
এর আগে, গত মেলার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারের মেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে পূর্বাচল নয়তো অন্যত্র হওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদেও পরিবর্তন আসে। এরপর বইমেলার বিষয়টি সামনে এলে তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে বাংলা একাডেমি। তাতে পুরাতন স্থান বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই মেলা হওয়ার সিন্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা